পাথেয় টুয়েন্টিফোর ডটকম: আফ্রিকার দেশ নাইজার থেকে রাষ্ট্রদূত ও সৈন্য প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। গত জুলাই মাসে অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির সঙ্গে টানাপোড়েন চলছিল ফ্রান্সের। এ ছাড়া নাইজারকে সমস্ত সামরিক সহযোগিতাও বন্ধ করা হবে। নাইজারের সামিরক বাহিনী এবং জনসাধারণ ফরাসি সৈন্য প্রত্যাহারের চাপ সৃষ্টি করছিল।
গত কয়েক সপ্তাহে রাজধানী নাইমেতে হাজার হাজার মানুষ ফরাসি সৈন্য প্রত্যহারের দাবিতে বিক্ষোভ করছিল।
ম্যাখোঁ বলেছেন, ‘ফ্রান্স তার রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী কয়েক ঘন্টার মধ্যে আমাদের রাষ্ট্রদূত এবং বেশ কয়েকজন কূটনীতিক ফ্রান্সে ফিরে আসবে।’ তিনি আরো যোগ করে বলেছেন, এর পাশাপাশি নাইজারে সামরিক সহযোগিতা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফরাসি সৈন্যরা আগামী মাসগুলোতে দেশে ফিরে আসবে।
গত জুলাই মাসে নাইজারে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তা ফ্রান্সের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে দেশটির জান্তা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘রবিবার আমরা নাইজারের সার্বভৌমত্বের একটি নতুন পদক্ষেপ উদযাপন করতে যাচ্ছি।’ স্থলবেষ্টিত পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে প্রায় এক হাজার ৫০০ ফরাসি সৈন্য রয়েছে।
নাইজারে ফরাসি উপস্থিতির বিরুদ্ধে কয়েক মাস ধরে বিদ্বেষ এবং বিক্ষোভ চলছে। এরপরেই প্যারিস এমন সিন্ধান্ত নিল।
পদক্ষেপটি নাইজারের বৃহত্তর সাহেল অঞ্চলে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের অভিযান এবং নাইজারে ফ্রান্সের প্রভাবকে বেশ জোরেই ধাক্কা দিবে। তবে ম্যাখোঁ বলেছেন যাইহোক, ফ্রান্স পুটশিস্টদের (জোর করে সরকারকে অপসারণ) হাতে জিম্মি হবে না।
ম্যাখোঁ বলেছেন, তিনি এখনও ক্ষমতাচ্যুত নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে দেশটির একমাত্র বৈধ সরকার হিসেবে বিবেচনা করেন এবং তাকে তার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
বাজুম বর্তমানে অভ্যুত্থান করা জান্তা সরকারের কাছে বন্দি। ম্যাখোঁ ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাজুমকে ‘জিম্মি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ম্যাখোঁ আরো বলেন, তিনি বাজিুম অভ্যুত্থানের লক্ষ্যবস্তু হয়েছেন। কারণ তিনি সাহসীভাবে দেশ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
নাইজার পশ্চিম আফ্রিকার বেশ কয়েকটি প্রাক্তন ফরাসি উপনিবেশগুলোর মধ্যে একটি দেশ। যেখানে সামরিক বাহিনী সম্প্রতি নিয়ন্ত্রণ দখল করেছে। বুর্কিনা ফাসো, গিনি, মালি এবং চাদেও একই অবস্থা। সর্বশেষ অভ্যুত্থান হয়েছিল আগস্টে গ্যাবনে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই অঞ্চলে ফরাসি-বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। অনেক স্থানীয় রাজনীতিবিদ প্যারিসকে নব্য ঔপনিবেশিক নীতিগুলো পরিচালনা করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। তবে এই অভিযোগ ফ্রান্স অস্বীকার করেছে। ফ্রান্সের সমর্থিত আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সম্প্রদায় ইকোওয়াস বাজুমকে পুনর্বহাল করার জন্য নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই পদক্ষেপ নেয়নি তারা।
সূত্র: বিবিসি।