পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : কথিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর গোলাগুলির মধ্যে আটকেপড়া নাতিকে বুক আগলে রক্ষা করতে গিয়ে ভারতের কাশ্মীরে মারা গেলেন ৬৫ বছরের নানা বশির আহমেদ খান।
নাতি আয়াত প্রাণে বেঁচে গেলেও সেনাদের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে বশির আহমেদের নিথর দেহ পড়েছিল রাস্তায়। ছোট্ট ছেলেটা তার বুকের ওপরে বসে অঝোরে কাঁদছে। খবর এনডিটিভি ও আনন্দবাজার পত্রিকার।
বুধবার (০১ জুলাই) ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর কাশ্মীরের বারামুলা জেলায় ‘আপেলের শহর’ সোপোরে।
রক্তে মাখামাখি নানার মরদেহ আর নাতির কান্নার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহৃর্তে তা ভাইরাল হয়ে যায়। কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এ সংঘর্ষের খবরটা তাই আর পাঁচটা দিনের চেয়ে আলাদা হয়ে ঝাঁকিয়ে দিয়েছে ভারতসহ গোটা বিশ্বকে।
পুলিশ বলেছে, ৬৫ বছরের বশির আহমেদ খান বুধবার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলিবিনিময়ের মধ্যে পড়ে নিহত হয়েছেন। ওই সংঘর্ষেই নিহত হয়েছেন সিআরপির হেড কনস্টেবল দীপচন্দ বর্মাও।
বশির ও তার নাতির এ হৃদয়বিদারক ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ তাকে উদ্ধারের খবর জানাতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, রক্তাক্ত কাশ্মীরের প্রতিটি ঘটনাই আজ প্রচারের হাতিয়ার। তিন বছরের শিশুও। বুধবার (০১ জুলাই) বিকালের মধ্যেই ভাইরাল হওয়া সেই ছবি নিয়ে জাতীয় স্তরে বিতর্ক বাধিয়েছেন বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। আয়াত ও তার নানার ওই ছবি টুইট করে লেখেন– এটা ‘পুলিৎজ়ার-প্রেমীরা’ করেছেন সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে।
৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর অবরুদ্ধ কাশ্মীরের ছবি তুলে তিন সাংবাদিক পুলিৎজ়ার পুরস্কার পাওয়ায় তাদের অভিনন্দন জানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
তখনও সম্বিতই বিরোধীদের আক্রমণ করেছিলেন। এবার নাম উল্লেখ না করে তিনি রাহুলদের জবাব তলব করেছেন ঠিকই, কিন্তু অসহায়-আতঙ্কগ্রস্ত শিশুটির ছবি সেই কাজে ব্যবহার করে সমাজমাধ্যমে তীব্র নিন্দার মুখেও পড়েছেন।
সম্বিতকে বয়কটের ডাক দিয়ে অভিনেত্রী দিয়া মির্জা বিজেপির ওই মুখপাত্রের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়েছেন– ‘আপনার মধ্যে কী একবিন্দু মায়াদয়া নেই?’
আয়াতের নানা শ্রীনগরের বাসিন্দা বশির ছিলেন নির্মাণ সংস্থার ঠিকাদার। বুধবার (০১ জুলাই) সকালে ব্যবসার কাজে গাড়ি চালিয়ে সোপোরে যাচ্ছিলেন। ঘণ্টা দুয়েকের পথ। সঙ্গে নিয়েছিলেন বছর তিনেকের নাতিকে।
/এএ