ফতোয়া ডেস্ক :
ফরজ নামাজের সিজদায় তাসবিহ ছাড়া অন্য দোয়া করার নিয়ম নেই। ফরজ নামাজের সিজদায় শুধু নির্ধারিত তাসবিহ পড়তে হবে। নিজের ভাষায় দোয়া করা যাবে না বা অন্যান্য দোয়া পড়া যাবে না। কোরআন-হাদিসে বর্ণিত দোয়াও ফরজ নামাজের সিজদায় পড়া যাবে না।
নফল নামাজের সিজদায় কোরআন-হাদিসে বর্ণিত দোয়া করা জায়েজ। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নফল নামাজের সিজদায় দোয়া করতেন। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) নামাজের সিজদায় দোয়া করতেন,
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِى ذَنْبِى كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি’ কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু ওয়া আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু।
অর্থ: হে আল্লাহ আমার সূক্ষ্ম, স্থুল, শুরু ও শেষের সব গুনাহ ক্ষমা করে দিন। (তাহাবি)
তবে ফরজ নামাজে যেমন নফল নামাজের সিজদায় বা অন্য কোনো অংশে নিজের মাতৃভাষায় বা অন্য যে কোনো ভাষায় মানুষের রচিত দোয়া করা যাবে না। কোরআন হাদিসে বর্ণিত কোনো দোয়ার অনুবাদও নামাজে পড়া যাবে না। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষের কথা নামাজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে নিষেধ করেছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, নামাজ মানুষের কথাবার্তা বলার ক্ষেত্র নয়। এটা শুধু তাসবিহ, তাকবির ও কোরআন তিলাওয়াতের জন্য সুনির্দিষ্ট। (সহিহ মুসলিম)
নামাজের যে কোনো অংশে দুনিয়াবি দোয়া অর্থাৎ মানুষের কাছেও পাওয়া যায় এমন কিছু প্রার্থনা করলে নামাজ ভেঙে যাবে। যেমন কেউ দোয়া করলো হে আল্লাহ আমাকে এক লক্ষ টাকা পাইয়ে দিন, চাকুরি বা বিয়ের ব্যবস্থা করে দিন ইত্যাদি।
ইসলামে নফল নামাজ বলতে এমন নামাজ বোঝায় যা আদায় করলে সওয়াব রয়েছে কিন্তু আদায় না করলে গুনাহ নেই। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্তের ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ, তিন রাকাত ওয়াজিব বেতর নামাজ ছাড়া অন্যান্য নামাজ নফল গণ্য হয়।
নামাজের সিজদায় কোরআন পাঠ করা যাবে?
নামাজে প্রতি রাকাতে দাঁড়ানো অবস্থায় কেরাত পড়া ফরজ। সুরা ফাতেহা পড়া ও সুরা মেলানো ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকার পরও কেউ যদি কোনো রাকাতে কুরআন থেকে কিছুই না পড়ে, তাহলে ওই রাকাতটি পূর্ণ হবে না। ভুল করে সুরা ফাতেহা বা ফাতেহা-পরবর্তী কেরাত না পড়লে সাহু সিজদা দিতে হবে। সাহু সিজদা না দিলে নামাজ আবার পড়া ওয়াজিব হবে।
নামাজে কোরআন পাঠের নির্ধারিত জায়গা হলো কিয়াম বা দাঁড়ানো অবস্থা। কোরআন যতটুকু পড়ার নির্ধারিত পড়তে হবে। রুকু বা সিজদায় কোরআন পাঠ করা করা যাবে না। রুকু-সিজদায়ে কোরআন পাঠ করতে হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে। হজরত আলী (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে রুকু বা সিজদায় কুরআন পাঠ করতে নিষেধ করেছেন। (সহিহ মুসলিম)
এ ক্ষেত্রে ফরজ ও নফল নামাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। ফরজ নামাজের রুকু-সিজদায় যেমন কোরআন পাঠ নিষিদ্ধ, নফল নামাজের রুকু-সিজদায়ও কোরআন পাঠ নিষিদ্ধ।