নির্বাচনের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে: চীনা রাষ্ট্রদূত

নির্বাচনের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে: চীনা রাষ্ট্রদূত

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফেরত পাঠাতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সঙ্গে চীন ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে প্রত্যাবাসনের বিষয়টিও অনেক দূর এগিয়েছে, গো এন্ড সি ভিজিট সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পাইলট প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারের আশ্রয় শিবির থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের রাখাইনে প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করছেন।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চীনা দূতাবাসের অর্থায়নে চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

এর আগে রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে বিভিন্ন সামগ্রী বিরতরণ করেন।
বিশ্ব সম্প্রদায়কে এ ইস্যু নিয়ে কাজ করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, কিছু রোহিঙ্গা বলছে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারে উপযুক্ত পরিবেশ নেই। কিন্তু তারা তো সারাজীবন বাংলাদেশে থাকতে পারবে না। তারা যাতে দেশে ফিরে যেতে পারে সে পথ বের করতে হবে।

চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর মধ্য দিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু হতে যাচ্ছে। কিন্তু এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এক রাতের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। চীন এখানে মধ্যস্থতাকারী উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আরো বলেন, ‘আমরা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সাহায্য করছি।

আমরা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ভালো বন্ধু। দুই দেশের অনুরোধে চীন সাহায্যকারী হিসেবে ভূমিকা রাখছে। আমরা তাদের একত্রিত করেছি কথা বলার জন্য, একটা সমাধান বের করার জন্য। যাতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ফিরে যেতে পারে।’

চীনের রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ‘আমরা খুশি যে এই কাজের অনেক অগ্রগতি হয়েছে।

এখানে (কক্সবাজারে) মিয়ানমারের কর্মকর্তারা এসেছেন, প্রত্যাবাসন নিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিছু রোহিঙ্গা রাখাইনে গিয়ে সেখানকার অবস্থা দেখে এসেছে। আমি বিশ্বাস করি, এখানে একটা ঐকমত্য হয়েছে, যাতে করে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে কিছু রোহিঙ্গা ফিরে যেতে পারে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো।’

সভায় বক্তব্য দেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (সুপার) মং টিং য়ো, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান, কক্সবাজার প্রেস ক্লাব সভাপতি আবু তাহের প্রমুখ। এ সময় চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালকে ১০টি মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। দীর্ঘ ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। এখন চীনের মধ্যস্থতায় পাইলট প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ১৭৬ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *