নির্বাচনের আগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে : চীনা রাষ্ট্রদূত

নির্বাচনের আগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে : চীনা রাষ্ট্রদূত

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে চীন। এর ফলে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে পাইলট প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে থাকা কিছু রোহিঙ্গাকে রাখাইনে পাঠানো সম্ভব হতে পারে।

আজ শুক্রবার দুপুরে ২৫০ শয্যার সরকারি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চীনা দূতাবাসের দেওয়া মেডিকেল যন্ত্রপাতি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা তুলে ধরেন ইয়াও ওয়েন। চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর মধ্য দিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু হতে যাচ্ছে। কিন্তু এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এক রাতের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

চীন এখানে মধ্যস্থতাকারী উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘আমরা প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সাহায্য করছি। আমরা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ভালো বন্ধু। দুই দেশের অনুরোধে চীন সাহায্যকারী হিসেবে ভূমিকা রাখছে। আমরা তাদের একত্রিত করেছি কথা বলার জন্য—একটা সমাধান বের করার জন্য। যাতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ফিরে যেতে পারে।’

চীনের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘আমরা খুশি যে এই কাজের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এখানে (কক্সবাজারে) মিয়ানমারের কর্মকর্তারা এসেছেন, প্রত্যাবাসন নিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিছু রোহিঙ্গা রাখাইনে গিয়ে সেখানকার অবস্থা দেখে এসেছে। আমি বিশ্বাস করি, এখানে একটা ঐকমত্য হয়েছে, যাতে করে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে কিছু রোহিঙ্গা ফিরে যেতে পারে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো।’

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ ও মিয়ানমার নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত প্রত্যাবাসন নিয়ে এক হয়ে কাজ করা। কিছু মানুষ বলছেন, মিয়ানমার পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত নয়। কিন্তু এই রোহিঙ্গারা দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশে বসবাস করতে পারে না। আমাদের একটা সমাধান বের করা দরকার, যাতে রোহিঙ্গারা নিরাপদে ফিরে যেতে পারে। সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটা সম্ভব।’

সভায় বক্তব্য দেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (সুপার) মং টিং য়ো, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান, কক্সবাজার প্রেসক্লাব সভাপতি আবু তাহের প্রমুখ।

এ সময় চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালকে ১০টি মেডিকেল যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। দীর্ঘ ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। এখন চীনের মধ্যস্থতায় পাইলট প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ১৭৬ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চলছে।

সূত্র: প্রথম আলো

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *