নির্বাচন কমিশন অভিমুখে গণমিছিলের হুঁশিয়ারি চরমোনাই পীরের

নির্বাচন কমিশন অভিমুখে গণমিছিলের হুঁশিয়ারি চরমোনাই পীরের

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনরত অন্যান্য বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সব কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। বিরোধী দলগুলোর দাবি না মেনে তফসিল ঘোষণা করা হলে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে গণমিছিলের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।

রেজাউল করীম বলেন, “নির্বাচন কমিশন একতরফা তফসিল ঘোষণা করতে চাইলে তফসিল ঘোষণার দিন নির্বাচন কমিশন অভিমুখে গণমিছিল করা হবে। সারাদেশে প্রতিটি জেলা ও মহানগরে অনুষ্ঠিত হবে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল।”

রবিবার (১২ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

গত ৩ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলনের সমাবশের কথা উল্লেখ করে চরমোনাই পীর বলেন, “সেখানে আমরা সরকারকে সতর্ক করে ১০ নভেম্বরের মধ্যে পদত্যাগের আহ্বান করেছিলাম। শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা ত্যাগের কথা বলেছিলাম। আপনারা জানেন, ইসলামের রীতি হলো, কোনো শক্ত অবস্থান নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে সতর্ক করতে হয়, সময় দিতে হয়। আমরাও তা দিয়েছিলাম। ৩ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করে ক্ষমতাসীনদের সীমাহীন ক্ষমতা লিপ্সার কারণে সৃষ্ট রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের ভয়াবহতা দেশবাসীর সামনে আমরা তুলে ধরি। শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংকট উত্তরণে সরকারের কাছে কিছু যৌক্তিক দাবিও জানাই। কিন্তু সরকার কর্ণপাত করেনি।”

তিনি বলেন, “নির্দিষ্ট মেয়াদের পরে সরকার পরিবর্তনে জনমতের মুখাপেক্ষী হওয়া আধুনিক বিশ্বে সর্বজন স্বীকৃত একটি রীতি। এই রীতি বাস্তবায়নে নির্বাচনকে অবাধ-নিরপেক্ষ করা জরুরি। স্বৈরাচার ছাড়া আর কেউ এই প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করে না। জাতীয় সংকট নিরসনে সব রাজনৈতিক দল, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে আগামী ২০ নভেম্বর ঢাকায় জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে এবং পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।”

ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বয়ংক্রিয় ও কার্যকর করা যায়নি। এ কারণে নির্বাচনকালীন সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে ১৯৯৬ সালে দেশে সার্বজনীন রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তার সুফলও জাতি পেয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার দেশের সার্বজনীন সমর্থিত এই ব্যবস্থাকে আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে হত্যা করেছে। শুধু হত্যা করেই তারা থামেনি বরং এই ইস্যুতে তাদের আচরণ, কথাবার্তা অমার্জিত ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ। যে কারণে আজকে সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”

তিনি বলেন, “বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আওয়ামী লীগও কর্মসূচি দিচ্ছে। সেসব কর্মসূচির নামের সঙ্গে শান্তি থাকলেও কার্যত তা সন্ত্রাসী কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে। লাঠি নিয়ে মহড়া, যাকে তাকে তল্লাশি করা, আতঙ্ক তৈরিতে আওয়ামী লীগ যা করছে, তা ৭১’র শান্তিবাহিনীর কথাই মনে করিয়ে দেয়।”

সংবাদ সম্মেলন থেকে চার দফা দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। দাবিগুলো হলো–

অনতিবিলম্বে চলতি সংসদ ভেঙে দিয়ে সব প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।

রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার ব্যক্তি, বিরোধী দলের সব নেতাকর্মী এবং ওলামায়ে কেরামকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে রাষ্ট্রপতির মধ্যস্থতায় সংলাপের আয়োজন করতে হবে।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে বাতিল করতে হবে।

রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির আগে কোনো অবস্থায় তফসিল ঘোষণা করা যাবে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *