নির্বাচন করেত পারছেন জামায়াতের ২৫ প্রার্থী

পাথেয় রিপোর্ট : ধানের শীষ প্রতীকে জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতা নিয়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা দেননি হাইকোর্ট। এর ফলে তাদের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে তাদের আর বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর ২৫ নেতার প্রার্থিতা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই ২৫ নেতার প্রার্থিতা বাতিলে চার ব্যক্তির করা আবেদন নামঞ্জুর করে ২৪ ডিসেম্বর সিদ্ধান্ত দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এর আগে ওই চার ব্যক্তির করা এক রিটের ধারাবাহিকতায় গতকাল ওই চার ব্যক্তি একটি সম্পূরক আবেদন করেন।

শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন। সম্পূরক আবেদনে ওই ২৫ জনকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল।

আজ আদালত রুল দিয়েছেন, তবে অন্তর্বর্তীকালীন কোনো নির্দেশনা দেননি। ফলে জামায়াতের ওই ২৫ নেতা যথারীতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইয়াছিন খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হাসেন সাজু। আর জামায়াত নেতাদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

রিট আবেদনের পক্ষে আইনজীবীরা জানান, জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ২০০৯ সালে রিট করা হয়। পরে হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করেন। ওই রায়ে বলা হয়, রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১)(বি)(২) এবং ৯০সি অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও সংবিধান পরিপন্থী। রায় এখনও বহাল।

রিটকারীর আইনজীবী তানিয়া আমীর জানান, নিবন্ধনহীন জামায়াতের কোনো নেতা নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে পারছেন না। অন্য দলের প্রতীকেও তাদের ভোটে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। এর পরও জামায়াতের নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে ইসি হাইকোর্টের রায় ও গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের বিভিন্ন বিধির সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

বুধবার রিট আবেদনটি আদালতে উপস্থাপনের পর এ বিষয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের বেঞ্চ।

বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নামের সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবিরসহ চার ব্যক্তি ওই আবেদন করেন। এর আগে ১৭ ডিসেম্বর এ নিয়ে ওই চার ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট করেন।

রিটে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে ২২ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিন জামায়াত প্রার্থীর ভোটে অংশগ্রহণের ওপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়। আবেদনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশন সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রার্থী হওয়া ২২ জনসহ ২৫ জামায়াত নেতা হলেন-

১. ঢাকা-১৫ আসনে ডা. শফিকুর রহমান

২. সিরাজগঞ্জ-৪ রফিকুল ইসলাম খান

৩. খুলনা-৬ আবুল কালাম আজাদ

৪. কুমিল্লা-১১ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের

৫. খুলনা-৫ মিয়া গোলাম পরোয়ার

৬. কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আযাদ

৭. পাবনা-৩ আনোয়ারুল ইসলাম

৮. পাবনা-৫ ইকবাল হোসাইন

৯. যশোর-২ আবু সাঈদ মো. শাহাদাত হোসাইন

১০. ঠাকুরগাঁও-২ আবদুল হাকিম

১১. দিনাজপুর-১ আবু হানিফ

১২. দিনাজপুর-৬ আনোয়ারুল ইসলাম

১৩. নীলফামারী-৩ আজিজুল ইসলাম

১৪. গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান

১৫. সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আবদুল খালেক

১৬. সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম

১৭. পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী

১৮. নীলফামারী-২ মো. মনিরুজ্জামান

১৯. ঝিনাইদহ-৩ মতিয়ার রহমান

২০. বাগেরহাট-৩ ওয়াদুল শেখ

২১. বাগেরহাট-৪ আসনে আবদুল আলীম

২২. চট্টগ্রাম-১৫ আসনে শামসুল ইসলাম।

স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হওয়া তিনজন

২৩. চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ নুরুল ইসলাম বুলবুল

২৪. চট্টগ্রাম-১৬ জহিরুল ইসলাম

২৫. পাবনা-১ আসনে নাজিবুর রহমান মোমেন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *