নূরুল হকের কবিতা

নূরুল হকের কবিতা

  • অঙ্গার

কিছু জিনিস বর্তমান থেকে
অতীত থেকে
আর ভবিষ্যৎ থেকে
তুলার মতো ছিঁড়ে ছিঁড়ে বাতাসে ভেসে আসে।
আমি তা সন্তর্পণে কুড়াই এখানে।
এগুলোকেই একদিন বলা হয় অঙ্গার।

  • তোমার হাত

অস্তিত্ব উবুড় হয়ে থাকে মাঝে মাঝে
কোনো আলোই এসে আর পৌঁছায় না
তবু না-বেঁচে থেকে আর কী করার আছে
আমার হাত যেখানে থেমে গেছে
তোমার হাত সেখানে বাড়িয়ে দাও।

  • পাঠের শেষ নেই

তোমার শরীর যেন একটি দীর্ঘ বাক্য
সোজা দাঁড়িয়ে থাকে জগতে।
দেবদূতগণ পাঠ করতে থাকে ইশারায়
সূর্যালোক শোষণ করতে থাকে ঘাসে ঘাসে
আকাশ এবং মাটির মধ্য-দ্রাঘিমায়
পৃথিবী হয়ে ওঠে একটি খোলা গ্রন্থ
সেখানে পাঠের কোনো শেষ নেই।

  • ক্রান্তি

রাত কাত হয়ে গেছে একদিকে
আমি হামাগুড়ি দিয়ে খুঁজছি
ভোরবেলার পথ।

  • ভাঁজ-পর্ব

শত পরতের শত এলোমেলো
ভাঁজ
খুলতে গিয়ে দেখি,
এ কী কাণ্ড! এ তো আমারই
জীবন!
আশ্চর্য!

  • সিউলে

দূর সমুদ্রের বুকে আলো জ্বলে, নেভে
আমি একাকী তাকাই নিচে
স্পন্দমান ফুলের ভঙ্গিতে
দাঁড়ি, কমা ভেসে গেছে জীবনে যাদের
তারা সমুদ্রের জলে নেমে এখন মাছ ধরতে লেগেছে
সিউলে রাতে আমার গ্রামের ছবি ভাসে।

  • স্পর্শ

তোমার রাত একটি চাঁদে গিয়ে মিশেছে
বাতাসে মিশেছে হাওরের গ্রাম
এবং গ্রামবাসীর জীবন।
এতদূরের স্বপ্ন এখানকার স্বচ্ছজলে
খণ্ডবিখণ্ড হয়
দেখে মোটেই বোঝা যায় না
এগুলো বর্তমান ভবিষ্যৎ আর
অতীতের ভাঙচুর,
আর জল যেন তোমার চোখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *