পরিস্থিতি বদলে দিতে পারে বিদেশি বিনিয়োগ

পরিস্থিতি বদলে দিতে পারে বিদেশি বিনিয়োগ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ২০২৪ সালে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগই পারবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সক্রিয় রাখতে। এরই মধ্যে বিনিয়োগের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) করা হচ্ছে। কয়েকটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে জোরেশোরে উৎপাদন শুরু হয়েছে। কর্মসংস্থান হয়েছে।

সেখানে দক্ষ কর্মীও গড়ে উঠছে। এখন বৈদেশিক বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি নিশ্চিত করতে হবে।
আমাদের জন্য আরো একটি সুযোগ অপেক্ষা করছে। চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে চীন থেকে স্থানান্তরিত বিশাল অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞের বড় আবাসস্থল হতে পারে বাংলাদেশ।

এ জন্য পরিকল্পিত নীতিমালা আর অংশীজনদের নিয়ে এখনই সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এটা করা গেলে বাংলাদেশ হবে এই অঞ্চলে অর্থনৈতিকভাবে অন্যতম শক্তিশালী দেশ। এরই মধ্যে চীন থেকে স্থানান্তরিত হয়ে বিনিয়োগ আসছে বাংলাদেশে।
সস্তা শ্রম, দক্ষ কর্মী, দীর্ঘ সময়ের ব্যাবসায়িক সম্পর্কের ফলে বৈশ্বিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নজর এখনো বাংলাদেশের ওপর আছে।

ফলে রপ্তানি বাজার বাড়ছে। কর্মপরিবেশেও এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ইউরোপ ও আমেরিকা যে নৈতিক সরবরাহব্যবস্থা চায়, সেখানেও বাংলাদেশের অগ্রগতি নজরে আসছে। এসব সুযোগ কাজে লাগাতে সরকারকে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দিতে হবে।
তবে এই সুযোগগুলো কাজে লাগানোর জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

নতুন সরকার এলে তাদের নতুন পরিকল্পনা কার্যকর করতে হবে। বছর কয়েক ধরে যে অর্থনৈতিক সংকোচন চলছে তা থেকে বের হতে এ জন্য একটি গবেষণালব্ধ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার মধ্যে প্রথমেই বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে গতিশীল উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের বিনিয়োগোর জন্য যে আকর্ষণীয় পরিবেশ তৈরি হয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে তা তুলে ধরতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে এ জন্য আন্তরিক উদ্যোগ নিতে হবে। সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করতে হবে, যেন তারা বাংলাদেশ থেকে বিমুখ না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

রপ্তানিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এর জন্য শিল্পের কাঁচামাল আমদানি নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য ব্যাংকগুলোকে সহায়ক ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সব ধরনের বিলাসপণ্য আমদানিতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা নিশ্চিত করতে হবে।

ডলার সংকটের এই সময় সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে প্রবাস আয়ে। প্রবাস আয় বাড়াতে অবৈধ পথে বৈদেশিক মুদ্রা (হুন্ডি) যেন দেশে আসতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। এ ছাড়া ডলারে খোলাবাজারের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে যাতে প্রবাস আয় আসে এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে কার্যকর নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে।

ডলার সংকটে শিল্পের কাঁচা আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা অনেক কমে গেছে। স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য।

তবে আগামী নির্বাচনের পর সরকারের নীতির ধারাবাহিকতার ওপর নির্ভর করবে ২০২৪ সালের ব্যবসা-বাণিজ্য, তথা দেশের অর্থনীতি। দেশের ব্যবসায়ী সমাজের প্রত্যাশা—গত বছরের সব মন্দা কেটে নতুন উদ্যমে দেশ এগিয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *