পাকিস্তান চোরাবালিতে আটকে গেছে : ইমরান খান

পাকিস্তান চোরাবালিতে আটকে গেছে : ইমরান খান

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মনে করেন, দেশটিতে ২০২৩ সালের এপ্রিলে সরকার আগাম নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। তিনি আরো বলেছেন , ‘নতুন সামরিক প্রধানের’ সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।

বিবিসি উর্দুর সংবাদদাতা উসমান জাহিদ, ইমরান খানের একটি বিশেষ সাক্ষাত্কার নেয়ার সময় তার সামনে প্রশ্ন রাখেন যে, তিনি দেশটির অর্থনৈতিক ও সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ে সরকারের সাথে কথা বলতে প্রস্তুত কি না?

ইমরান খান বলেন, এই সরকার কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি। বরং তারা নিলামের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সংসদ সদস্যদের কেনা-বেচার মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন। তিনি ২০-২৫ কোটি রূপি দিয়ে এমপিদের ভোট ক্রয় করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন ইমরান খান।

এক্ষেত্রে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়া, শেহবাজ শরিফকে সমর্থন জুগিয়েছেন বলে উল্লেখ করে ইমরান খান। বাজওয়ার বিরুদ্ধে ১১০০ বিলিয়ন রূপি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে – এ কথা উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন, পাকিস্তানের অর্থনীতি ডুবে গেছে।

তিনি বলেন, পাকিস্তান একটি চোরাবালিতে আটকা পড়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। অন্যথায় পাকিস্তানের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে বলে তিনি সতর্ক করে দেন।

নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে?

পাকিস্তানের কিছু রাজনীতি বিশ্লেষক মনে করেন, ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ আগামী আগস্ট মাসে সাধারণ নির্বাচন চায়। কিন্তু সরকারের মন্ত্রীরা বারবার ঘোষণা করেছেন যে, পার্লামেন্ট তার মেয়াদ শেষ করবে এবং অক্টোবরে নতুন সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ইমরান খান বলেন, বর্তমান সরকারের সাথে সম্পৃক্ত মানুষজন আইনের শাসনকে ভুলুন্ঠিত করেছে। তারা নিজেদেরকে আইনের ঊর্ধ্বে রেখেছে। নিজেদের করা সব চুরি ও দুর্নীতি মাফ করে দিয়েছে।

শেহবাজ, নওয়াজ, জারদারি, মরিয়ম – সবাই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছে। এর চাইতে বড় জুলুম আর কী হতে পারে? যতো সময় যাবে, তাদের উদ্দেশ্য নিজেদের বিরুদ্ধে মামলা শেষ করা। ইমরান খান বলেন, এই মুহূর্তে দুই মাস অনেক দূরে মনে হতে পারে।

“আপনি আগস্টের কথা বলছেন। কিন্তু আমি এখনকার কথা বলছি। আমাদের অর্থনীতি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। রিজার্ভ আছে মাত্র চার বিলিয়ন ডলার।”

“বন্দরে পণ্য পড়ে আছে কিন্তু খালাস করা যাচ্ছে না। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, বেকারত্ব বাড়ছে, কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে,’ বলেন ইমরান খান।

এমন অবস্থায় এই সরকার আরো দুই মাস কিভাবে পার করবে সে প্রশ্ন তোলেন খান। তার ধারণা হচ্ছে, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন সরকার এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি আরেকটি কারণে তাৎপর্যপূর্ণ হবে কারণ ঠিক এক বছর আগে, একই মাসে, পার্লামেন্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয়েছিল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *