৮ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৮ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ টাকা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের আট দান সিন্দুকে ১৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। এরপর দিনব্যাপী চলে গণনা। গণনা শেষে অঙ্ক দাঁড়িয়েছে সাড়ে পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ সাত হাজার ৬৮৯ টাকা। সঙ্গে মিলেছে বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার।

শনিবার (৬ মে) রাত সোয়া ৯টায় এই মসজিদের দানবাক্স খোলা উপ-কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “মসজিদের দান বাক্স চার মাস পর আবার খোলা হয়েছে। রাত ৯টা পর্যন্ত গণনা শেষে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ সাত হাজার ৬৮৯ টাকা। এই মসজিদের দানবাক্স খুলে এর আগে কখনও একসঙ্গে এত টাকা পাওয়া যায়নি।”

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ৮টি দান সিন্দুকে ২০ বস্তা টাকা দিনভর গুনে পাওয়া গিয়েছিল ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। এছাড়া পাওয়া গিয়েছিল বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা এর আগে ২০২২ সালের ১ অক্টোবর খোলা হলে পাওয়া যায় তিন কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা। একই বছরের ২ জুলাই খুলে তিন কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা পায়।

মসজিদ সংশ্লিষ্টরা বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, মসজিদের আটটি দান বাক্স সাধারণত ৯০ থেকে ৯৫ দিনের মধ্যে ভরে যায়। এ কারণে তিন মাস পরপর খোলা হয়। তবে এবার রোজাসহ নানা কারণে একটু দেরিতে খোলা হলো।

এর আগে সকাল ৮টায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজ এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দান সিন্দুক খোলা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সিরাজুল ইসলাম, শেখ জাবের আহমেদ ও সাদিয়া আফরিন, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখ।

কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে দান করে থাকেন। মানুষ টাকাপয়সা ছাড়াও স্বর্ণালংকার দান করেন। এছাড়া গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসও মসজিদটিতে দান করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, মুসলমানসহ সব সম্প্রদায়ের লোকজন লোকজন এ মসজিদে দান করেন। তবে অর্থ ও মূল্যবান ধাতুর পাশাপাশি পাওয়া যায় চিঠি। সেখানে লোকজন তাদের জীবনের পাওয়া, না-পাওয়ার বেদনা, আয়-উন্নতির আর্জি ও রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে আকুতি প্রকাশ করেন।

টাকা গণনার কাজে মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রায় দুই শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মসজিদের জমানো টাকা দিয়ে এখানে মসজিদ-মাদ্রাসাসহ অর্ধলাখ মুসল্লি যাতে একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন এ রকম আকর্ষণীয় একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে ১২০ কোটির মতো টাকা লাগতে পারে।

মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তাও করা হয়ে থাকে।”

শেয়ার করুন


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ১৯৮৬ - ২০২৩ মাসিক পাথেয় (রেজিঃ ডি.এ. ৬৭৫) | patheo24.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com