পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ১৫ এপ্রিল সুদানে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে ১ লাখেরও বেশি মানুষ সুদান ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। লড়াই তৃতীয় সপ্তাহে গড়িয়ে যাওয়ায় মানবিক সংকট সৃষ্টি হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ কর্মকর্তারা। এ ছাড়াও সুদানে আরো ৩ লাখ ৩৪ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।যুদ্ধবিরতি কর্যকর করা সত্ত্বেও রাজধানী খার্তুমে সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এর মধ্যে লড়াই চলছেই। যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে আলোচনার টেবিলে আনার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার দক্ষিণ সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সেনাবাহিনী এবং আরএসএফ ৪ মে থেকে নতুন আরো সাত দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।সুদানে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ভলকার পার্থেস এপি সংবাদ সংস্থাকে বলেছে, দুই পক্ষই একটি ‘স্থিতিশীল এবং নির্ভরযোগ্য’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তিনি আরো যোগ করে বলেন, সৌদি আরব আলোচনার জন্য একটি সম্ভাব্য স্থান ছিল। যদি আলোচনা হয় তবে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর এটিই হবে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম বৈঠক।
সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত এবং ৮ হাজারের এর বেশি মানুষ আহত হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মুখপাত্র ওলগা সাররাডো জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেছেন, পালিয়ে যাওয়া ১ লাখ মানুষ মধ্যে আছেন, সুদানের নাগরিক, দক্ষিণ সুদানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকারী নাগরিক এবং যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা মানুষ যারা ইতিমধ্যেই সুদানে শরণার্থী হিসেবে ছিলেন। শরণার্থীরা উত্তরে মিশর এবং পশ্চিমে চাদের সঙ্গে সুদানের সীমান্ত দিয়েও পালিয়েছে।
এদিকে সুদানের খার্তুমে, খাদ্য, জল এবং বিদ্যুৎ ফুরিয়ে আসছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক পরিচালক আহমেদ আল-মানধারি বলেছেন, খার্তুমে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলো আক্রমণের মুখে পড়েছে এবং কিছু আবার সামরিক ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে প্রায় ২৬টি হামলার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কয়েকটি হামলার ফলে এই হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কর্মী ও বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও এই হাসপাতালগুলোর মধ্যে কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহৃত হয় এবং তারা কর্মীদের বের করে দিয়েছে। রোগীদের এই স্বাস্থ্যসেবাও দিতে দিচ্ছে না।’
সুদানে জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয়কারী আবদু দিয়েং বলেছেন, যুদ্ধের আগেই সুদানের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের প্রায় ১৬ মিলিয়ন মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন ছিল। প্রায় ৩.৭ মিলিয়ন মানুষ ইতিমধ্যেই অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে, বেশিরভাগই দারফুরে অঞ্চলে।
- সূত্র : বিবিসি