পাথেয় রিপোর্ট : নির্বাচন কড়া নাড়ছে যেন। নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়েছে সারাদেশেই। দেশের সব অাসনেই প্রার্থীদের শেষ মুহুর্তের গণসংযোগ মিছিল মিটিং চলছে সর্বোচ্চভাবে। এদিকে পিরোজপুর-১ (সদর-নেছারাবাদ-নাজিরপুর) সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম নেতা-কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
অন্যদিকে তার বিরোধী প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জামায়াত নেতা কারাবন্দী সাঈদীর ছেলে শামীম বিন সাঈদী ভোটযুদ্ধের শেষ মুহূর্তেও মাঠে আসেননি। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শামীম বিন সাঈদীর দৃশ্যমান নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা লক্ষ্য করা যায়নি, দেখা মিলছে না ধানের শীষের পোস্টার।
ইতিমধ্যে শ ম রেজাউল করিমের পক্ষে প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা একাট্টা হয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী শ ম রেজাউল করিম প্রত্যেকটি ইউনিয়নে নির্বাচনী সভা-সমাবেশসহ চালিয়ে যাচ্ছেন গণসংযোগ। সড়ক, হাট-বাজার, অলি-গলি ছেয়ে গেছে নৌকার পোস্টারে। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। মিছিল মিটিং করে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
শ ম রেজাউল করিম আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক হওয়ায় পিরোজপুর-১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী দলের সকল নেতাকে এক মঞ্চে এনে তার নির্বাচনী যুদ্ধকে বিজয়ের পথে ধাবিত করেছেন নিশ্চিন্তে। রেজাউলের সাথে পিরোজপুর-১ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল বিভিন্ন গণসংযোগ-মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন। সব মিলে এ আসনের নির্বাচনী মাঠ এক কথায় শ ম রেজাউল করিমের দখলে।
অন্যদিকে ধানেরশীষের প্রার্থী মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাভোগকারী পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম বিন সাঈদীকে কখনই মাঠে বা জনসম্মুখে দেখা যায়নি। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর তিনি ঢাকা থেকে পিরোজপুরে আসেননি। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময়ও তাকে দেখা যায়নি। প্রথম দিকে তার পোস্টার দেখা গেলেও এখন তা উধাও। কোথাও কোনো প্রচার-প্রচারণা নেই ধানের শীষের। বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীকে তাদের দলীয় প্রতীক ধানের শীষের পক্ষে টুশব্দটিও করতে শোনা যায়নি। জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা জামায়াতের এই প্রার্থীকে মেনে নিতে পারেননি শুরু থেকেই। উল্টো গ্রেফতার-হামলা-মামলা-হয়রানীর ভয়ে অনেকেই ঘর ছাড়া, এলাকা ছাড়া। ইতিমধ্যে জেলা বিএনপির সহসভাপতি এলিজা জামানসহ অনেক কর্মী-সমর্থক গ্রেফতার হয়েছেন।
নাজিরপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম খান, নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা ওয়াহিদুজ্জামান চুপচাপ ঘরে বসে আছেন। তারপরও আশায় বুক বেঁধে আছেন ধানের শীষের পক্ষে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। অনেকটা ঘাপটি মেরে গোপনে গোপনে প্রচার চালাচ্ছেন জামায়াত কর্মীরা। তাদের ধারণা সাঈদীর প্রতি অন্ধ বিশ্বাসে বিশেষত, নারী ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসতে পারলে ফলাফল ধানেরশীষের পক্ষে যাবে।
এ আসেন জাতীয় পার্টির মো. নজরুল ইসলাম (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের মুহাম্মাদ মাসুম বিল্লাহ (হাতপাখা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) মেহেদি হাসান রনি (আম) মার্কার পোস্টার দেখা যায়। সিপিপির ডা. তপন বসুর (কাস্তে) পোস্টার নেই। তিনি কয়েক দিন আগে দুর্বৃত্তের হামলায় আক্রান্ত হয়ে নিরব হয়ে গেছেন। পিরোজপুর-১ আসেন মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৮ হাজার ৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১০ হাজার ৩৬৭ জন ও নারী ২ লাখ ৭ হাজার ৬৭১ জন।