পুনঃময়নাতদন্তের  নির্দেশ

পুনঃময়নাতদন্তের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক ● রাজশাহীতে নিহত মালদ্বীপের মডেল ও মেডিকেল কলেজের ছাত্রী রাউধা আতিফের মৃতদেহের পুনঃময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মাহবুবুর রহমান এ আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এ মৃতদেহ তুলতে হবে। তবে কবে মৃতদেহ তোলা হবে তা ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঠিক করবেন। এর আগে গত সোমবার বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজশাহী সিআইডির পরিদর্শক আসমাউল হক মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মৃতদেহে উত্তোলনের আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

১৪ এপ্রিল দুপুরে এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একইসঙ্গে রাউধার মৃত্যুর পর শাহ মখদুম থানায় করা অপমৃত্যুর মামলাটির তদন্তভারও সিআইডির ওপর ন্যাস্ত হয়। রাজশাহী সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খাঁন জানান, পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এ দু’টি মামলা তদন্ত করবে সিআইডি।

সিআইডির রাজশাহীর পরিদর্শক আসমাউল হককে মামলা দু’টি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, সকালে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা দু’টি মামলারই কাগজপত্র আগের তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বুঝে নিয়েছেন। মামলা দু’টি হলেও ঘটনা এক। তাই সিআইডির একজন কর্মকর্তাই দুই মামলার তদন্ত করবেন। পরে তদন্তে যা পাওয়া যাবে, তার উপর ভিত্তি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেবেন। গত ২৯ মার্চ রাজশাহীর নওদাপাড়ায় অবস্থিত ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেল থেকে রাউধা আতিফের মৃতদেহ উদ্ধার করে শাহ মখদুম থানা পুলিশ। রাউধা ওই কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানায়, রাউধা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় ওইদিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে নগরীর শাহ মখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে। রাউধার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে তাকে রাজশাহীতে দাফন করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এরপর মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে গিয়ে ঘটনা তদন্ত করেন।

দেশে ফিরে গিয়ে তারা জানান, রাউধাকে হত্যার কোনো প্রমাণ পাননি। এদিকে, রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় কলেজের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে কমিটিও তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন। তবে গত ১০ এপ্রিল তার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, রাউধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। মামলায় রাউধার বান্ধবী সিরাত পারভীন মাহমুদকে (২১) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। সিরাতের বাড়ি ভারতের কাশ্মীরে। তবে সিরাতের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তাকে গত সোমবার পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি। তাকে গ্রেফতার করা হবে কী-না সে ব্যাপারেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *