পুলিৎজার পেলেন কাশ্মীরের তিন সাংবাদিক

পুলিৎজার পেলেন কাশ্মীরের তিন সাংবাদিক

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : গত বছরের আগস্টে ভারতশাসিত কাশ্মীরে অভূতপূর্ব লকডাউন জারি করেছিল ভারত। টানা কারফিউ, মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় সেখানকার শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিশ্বের সামনে তুলে ধরা ছিল কঠিন। কিন্তু কাশ্মীরে কী হচ্ছে, বিশ্বকে ঠিকই জানিয়ে দেন মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) তিন ফটোগ্রাফার দার ইয়াসিন, মুক্তার খান ও চান্নি আনন্দ। এখন তারা তাদের কাজের স্বীকৃতি পেলেন। সাংবাদিকতার সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার পুলিৎজার জিতেছেন এ তিন ফটোসাংবাদিক।

সাধারণত প্রত্যেক বছর নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুলিৎজার দেওয়া হয়। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সোমবার (০৪ মে) ভার্চুয়ালি পুরস্কার জয়ীদের নাম ঘোষণা হল। পুলিৎজার বোর্ড প্রশাসক ডানা ক্যানেডি তার থাকার ঘর থেকে ইউটিউব লাইভস্ট্রিমে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন। ‘অস্থির জীবনের আকর্ষণীয়’ ছবি তোলায় পুরস্কারের জন্য তিন কাশ্মীরি সাংবাদিককে মনোনীত করার কথা জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাংবাদিক ও প্রতিষ্ঠানকে প্রত্যেক বছর দেওয়া হয় এই সম্মানজনক পুরস্কার। ইয়াসিন, আনন্দ ও মুক্তার এটি জিতেছেন ফিচার ফটোগ্রাফি শাখায়। কখনো রোডব্লক এড়িয়ে, অপরিচিত কারো বাড়িতে ঢুকে এবং সবজির ব্যাগে ক্যামেরা লুকিয়ে বিক্ষোভ, পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর অভিযান এবং প্রাত্যহিক জীবনের ছবি তুলেছেন তিনজন।

ছবি তুলে স্থানীয় বিমানবন্দরে গেছেন। সেখানে যাত্রীদের বুঝিয়ে ফটো ফাইলগুলো ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির এপি’র কার্যালয়ে পৌঁছে দিতে অনুরোধ করেছেন তিন ফটোসাংবাদিক। পুরস্কার জয়ের পর ই-মেইল বার্তায় ইয়াসিন বলেছেন, ‘সবসময় এটা ছিল ইদুর-বিড়াল খেলা। এসব আমাদের আরও বেশি দৃঢ় করেছে যে কখনও চুপ করে বসে থাকা যাবে না।’

ইয়াসিন ও মুক্তার কাশ্মীরের প্রধান শহর শ্রীনগরের বাসিন্দা, আর আনন্দ জম্মুর। পুরস্কার জিতে নির্বাক আনন্দ, ‘আমি হতভম্ব, বিশ্বাসই হচ্ছে না।’ এপির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী গ্যারি প্রুইট বলেছেন, তাদের কাজ ছিল ‘গুরুত্বপূর্ণ এবং দুর্দান্ত’। তিনি যোগ করেছেন, ‘কাশ্মীরের ভেতরে থাকা আমাদের কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। তাদের জন্যই মানুষ এই অঞ্চলের স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের নাটকীয়তা দেখার সুযোগ পেয়েছে।’

গত বছর ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার। ওই পদক্ষেপের পর কাশ্মীরজুড়ে অস্থিরতা ঠেকাতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী কারফিউ জারি করা হয়। তাতে সীমিত হয়ে পড়েছিল অঞ্চলের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *