পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের কাজ ৯৫% শেষ, জুনে হতে পারে উদ্বোধন

পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের কাজ ৯৫% শেষ, জুনে হতে পারে উদ্বোধন

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়েটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে রাজধানীর প্রগতি সরণি ও বিমান বন্দর সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।

রাজউক সূত্রে জানা যায়, সাড়ে ১২ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে রাজধানীর কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে ১৪ লেন বিশিষ্ট। এরমধ্যে ৮ লেন সড়ক হবে এক্সপ্রেসওয়ে। বাকি ৬ লেন সড়ক হবে স্থানীয় যানবাহন চলাচলের জন্য সার্ভিস রোড।

বালু নদী থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক হবে ১২ লেনের। এরমধ্যে ৬ লেন সড়ক হবে এক্সপ্রেসওয়ে। বাকি ৬ লেন হবে সার্ভিস রোড। এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৯৫% কাজ শেষ হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬৪ কোটি টাকা।

এছাড়া এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলের জন্য ১০টি বড় সেতু নির্মাণ করা হবে (২০১৫ সালের মূল প্রকল্প সেতু ছিল ৬টি)। সেতুগুলো নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮৮ কোটি টাকা।

কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত পুরো এলাকায় সড়ক নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। এখন চলছে সড়ক ও খালের পাশে ড্রেন নির্মাণের কাজ। অনেক জায়গায় সড়কের মাঝে ডিভাইডার নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্প নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে।

রাজউক আরও জানায়, হাতিরঝিলের আদলে ১৩টি আর্চ ব্রিজ (বাঁকানো সেতু) নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে ২২৭ কোটি টাকা। এক্সপ্রেসওয়ের পাশের এলাকার লোকজন যাতে গাড়ি নিয়ে সার্ভিস লেন থেকে মূল সড়কে ঢুকতে পারে। সেজন্য ৫টি এ্যাটগ্রেড ইন্টার সেকশন নির্মাণ করা হচ্ছে। ইন্টার সেকশনের নিচ দিয়ে পাতাল সড়ক যুক্ত হবে এক্সপ্রেসওয়েতে।

এছাড়াও এ প্রকল্প এলাকায় চার কিলোমিটার বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের লাইন, ২টি কালভার্ট, ১২টি ওয়াটার বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হবে।

তাছাড়া ২০১৫ সালের মূল প্রকল্পে উল্লেখ থাকা পথচারী-সেতুর সংখ্যা ৪টি থেকে বাড়িয়ে ১২টি, পাম্প হাউস ১টি থেকে বাড়িয়ে ৫টি, সুইচ গেইট ৪টি থেকে বাড়িয়ে ১০টি করা হয়েছে।

রাজউকের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা ইউএনবিকে বলেন, “দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হবে। আশা করছি আগামী ৩ মাসের মধ্যে উদ্বোধন করা হবে। এ সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে প্রকল্পটি উদ্বোধন করা হবে। এই সড়ক নির্মাণ হলে রাজধানীর সঙ্গে পূর্বাচলের যোগাযোগ সড়ক ও আধুনিক হবে। রাস্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদানে রাজউক ও পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে।”

তিনি বলেন, “রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ তিনটি খাল ডুমনি, বোয়ালিয়া ও এডি-৮। এগুলো দিয়ে এক সময় বিমানবন্দর, নিকুঞ্জ, বারিধারাসহ আশপাশের এলাকার বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হতো। কিন্তু তিনটি খালই প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। এখন এসব খাল সংস্কারের জন্য এই প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছে। তাই প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে। এই খালের মাধ্যমে বর্ষা মৌসুমে কুড়িল ডিওএইচএস, বারিধারা, সেনানিবাস ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকাসমূহের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।”

প্রকল্পটি প্রথম মেয়াদ ছিল ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট। তিন বছরের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। ২০১৫ সালে প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৫ হাজার ২৮৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এরসঙ্গে আরও তিনটি খাল, সড়ক, সেতুসহ আনুষঙ্গিক বিষয় যুক্ত হওয়ায় সংশোধিত প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ৫ হাজার ৪২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বৃদ্ধি করা হয়। এতে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৩২৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *