প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় : তালেবান

প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় : তালেবান

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আফগানিস্তানে সম্প্রতি প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনা চলছে। তবে এতে আফগানিস্তানের বর্তমান তালেবান প্রশাসন মোটেই বিব্রত নয়। বরং তারা জানিয়েছে, প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিষয়টি আফগান প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে কারও কিছু বলার থাকতে পারে না। আর ৯৯ শতাংশ মুসলিমের দেশে শরিয়া আইনই চলবে, এটাই স্বাভাবিক।

গত বছরের আগস্টে ক্ষমতা পুনঃদখলের পরপরই কয়েকজনকে সবার সামনে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সেটি নিয়ে তখন সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছিল। তবে এরপর দীর্ঘদিন আর এ ধরনের কোনো শাস্তি কার্যকর হওয়ার ঘটনা দেখা যায়নি। তবে সম্প্রতি আফগানিস্তানে আরেক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। গত বুধবার তালেবানের পক্ষ থেকে বিষয়টি সরকারিভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ব্যাপারে তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানান, সাজাপ্রাপ্ত তাজমির ২০১৭ সালে ছুরিকাঘাতে এক ব্যক্তিকে খুন করেছিল। সম্প্রতি সেই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ইসলামি শরিয়াত অনুসারে শাস্তি প্রয়োগের আগে বিচারকের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তির পরিবারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তারা কি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মাফ করে দিতে রাজি আছেন কি না। নিহত ব্যক্তির পরিবার তাতে রাজি না হওয়ায় তালেবান কর্তৃপক্ষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পদক্ষেপ নেয়।

আফগানিস্তানের পশ্চিম প্রান্তের ফারাহ প্রদেশে প্রকাশ্যে ওই খুনিকে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে স্বয়ং নিহত ব্যক্তির পিতা। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন আফগানিস্তানের উপ-মুখ্যমন্ত্রী আবদুল ঘানি বারাদর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানি এবং দেশটির প্রধান বিচারপতি, স্থানীয় তালেবান নেতৃত্বসহ সাধারণ লোকজন।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের কঠোর সমালোচনায় মাতে। এর জবাবে তালেবান প্রশাসন জানায়, আফগান বিচারব্যবস্থা নিয়ে যে সমালোচনা করা হচ্ছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।

তালেবান মুখপাত্র মুজাহিদ বলেন, ইসলাম ও আফগানিস্তান সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণেই প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি নিয়ে অযথা সমালোচনা করা হচ্ছে। তিনি যুক্তি দেন, আফগানিস্তানের ৯৯ শতাংশ মানুষ মুসলমান। ফলে এদেশে শরিয়া আইনই চলবে। এ নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। আর মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ব্যাপারটি শুধু আফগানিস্তানেই নয়, আমেরিকা-ইউরোপেও এ ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *