প্রশিক্ষণের নামে হাতি শাবক নির্যাতন বন্ধের নির্দেশ

প্রশিক্ষণের নামে হাতি শাবক নির্যাতন বন্ধের নির্দেশ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : প্রশিক্ষণের নামে হাতি শাবকের ওপর ‘নির্মম’ নির্যাতন বন্ধের আদেশ দিয়েছে মৌলভীবাজারের একটি আদালত। সোমবার মৌলভীবাজার মুখ্য বিচারিক হাকিম এবং ‘জাস্টিস অব্ দি পিস, মৌলভীবাজার’ মুহম্মদ আলী আহসান এ আদেশ দেন; যা এই হাকিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

হাতি শাবককে নির্যাতনের সংবাদ এবং ইউটিউবে ভিডিও আদালতের দৃষ্টিগোচর হলে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেয়া হয়।

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে পাহাড়ের গহীনে হাতির মালিকরা হাতি শাবক পোষ মানানোর এমন নির্যাতন চালানো হয় বলে একটি দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়।

প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আদেশে বলা হয়, চার বছরের হাতি শাবককে বশে আনতে পেটানো হয় ইচ্ছে মত, কখনও কখনও লোহা দিয়ে তৈরি ‘কুকু’ ব্যবহার করা হয় নির্যাতনের কাজে। চার-পাঁচ বছর বয়সী বাচ্চাকে ব্যবসার কাজে নামানোর জন্য অমানবিকভাবে এ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। স্থানীয়ভাবে এ প্রশিক্ষণকে বলা হয় ‘হাদানি’।

এ সময় বাচ্চা হাতিটিকে মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে বেঁধে রাখা হয়। দুই থেকে তিন মাসব্যাপী চলা এ প্রশিক্ষণের সময় নানা কলাকৌশল শেখাতে মূল অস্ত্রই হলো ‘নির্মম’ শারীরিক নির্যাতন। এই সময় হাতিটি শৃঙ্খলমুক্ত হতে জোরাজুরি করে, যন্ত্রণায় শূঁড় উপরে তুলে কাতরায়। ফাঁকে ফাঁকে খড়ের সঙ্গে মিষ্টান্ন মিশিয়ে হাতিটিকে খাওয়ানো হয়। এরপর রশি দিয়ে টেনে টেনে বিভিন্ন স্থান ঘোড়ানো হয়। এরপর আবার বেঁধে রাখা হয় শাবকটিকে। এই নির্যাতনের প্রক্রিয়ায় শাবকটি মাটিতে লুটিয়েও পড়ে। এরকম নির্মম নির্যাতনের পর মানুষের বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করা হয় শাবককে।

এর ফলে অনেক হাতি মানসিক সমস্যাগ্রস্ত হয়ে যায়, যাকে স্থানীয় ভাষায় পাগলা হাতি বলা হয়ে থাকে। এমন পাগলা হাতির আক্রমণে প্রায় সময় মানুষও মারা যায়।

অন্যান্য বন্যপ্রাণীর মতো হাতি সুরক্ষার জন্য দেশে প্রচলিত আইন থাকলেও এমন বেআইনি ও প্রাচীন পদ্ধতিতে হাতিকে পোষ মানানো হয় এবং প্রায় সময় নিষ্ঠুর নির্যাতনের ফলে হাতি শাবক মারাও যায়।

গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনা প্রচারিত হওয়ার পর এই আদালত স্বতঃপ্রণিাদিত হয়ে এ আদেশ দেয়।

আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন ও কারণ দর্শানোর জবাব দাখিলের জন্য ধার্য করা হয়েছে।

সুত্র: নয়া দিগন্ত

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *