উত্তরঃ খাবারকে সুস্বাদু ও সুঘ্রাণময় করে তোলার জন্য চা কফি কিংবা বিরিয়ানীতে জাফরান মিশিয়ে খেতে পছন্দ করেন অনেক ভোজনবিলাশী। তবে জাফরান যেহেতু সুগন্ধি বস্তু ইহরাম অবস্থায় তা খাওয়া যাবে কিনা এই শঙ্কায় থাকেন অনেকে। আজ এ ব্যাপারে আমরা ফিকহে হানাফির আলোকে বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশা আল্লাহ।
জাফরান কোনো খাবারের সাথে মিক্স করে রান্না করে কিংবা চা কফির সাথে মিশিয়ে গরম করে খেলে মুহরিমের জন্য কোনো সমস্যা নেই। যদি লবণ বা গোলমরিচের সাথে সামান্য পরিমাণে জাফরন মিশিয়ে খায় তাতেও বড় কোনো সমস্যা নেই এবং কোনো ফিদইয়াও না ওয়াজীব হবে না । এর কারণ হিসেবে ইমাম সারাখসী লেখেন- এই সামান্য জাফরান দ্বারা স্বাদবৃদ্ধি উদ্দেশ্য, গন্ধময়তা উদ্দেশ্য নয়। (আল মাবসুত) ।
তবে তা মাকরুহ হবে। আর যদি লবণ বা গোলমরিচের চাইতে জাফরানের পরিমাণ বেশী হয় তাহলে ফিদইয়া দিতে হবে।
আল্লামা কাসানী লিখেন- কোনো সুগন্ধিবস্তু যদি খাবারের সাথে রান্না করা হয় মুহরিম তা খেলে কোনো সমস্যা নেই। যদিও রান্নার পরে খাবারে তার গন্ধ ভেসে বেড়ায় তবুও সমস্যা হবে না। আর যদি রান্না করা ছাড়া লবণ ইত্যাদির সাথে মিশিয়ে সামান্য পরিমাণে খায় তাহলে তা মাকরুহ হবে। তবে কোনো ফিদইয়া আসবে না। (বাদাই’উস সানাইঈ’)
বুঝা গেলো, রান্না করা ছাড়া সামান্য পরিমাণে জাফরন খেলে তা মাকরুহ হবে। আর বেশী পরিমাণে খেলে তার উপর ফিদিয়া আসবে।
আদ দুররল মুখতার গ্রন্থে আছে- যদি রান্না করে খায় তাহলে সমস্যা নেই তবে যৎসামান্য কাঁচা খেলে মাকরুহ হবে কিন্তু ফিদিয়া বা কাফফারা আসবে না, কিন্তু বেশী পরিমাণে খেলে ফিদিয়া দিতে হবে।
মোটকথা, জাফরান বিরিয়ানির সাথে রান্না করে খেলে কোনো সমস্যা নেই। রান্না করা ছাড়া সামান্য পরিমাণে খেলে তা মাকরুহ। বেশী পরিমাণে খেলে ফিদইয়া দিতে হবে।
উল্লেখ্য যে, এক্ষেত্রে মুহরিমের ফিদইয়া হলো, হয়তো একটি বকরি জবাই দিবে, নয়তো ছয়জন অসহায়কে আহার করাবে অন্যথায় তিনদিন রোযা রাখবে।
সূত্র- আল মাবসূত লিস সারাখসী- ৪/১২৪, বাদাই’উস সানাইঈ’ ২/১৯১, আদ দুররল মুখতার ২/৫৪৬
উত্তর প্রদানে, মুফতি আব্দুস সালাম ইবন হাশিম
পরিচালক, ইমাম শাইবানী ফিকহ একাডেমী