পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ফার্মগেট থেকে বিআরটিসির বাসে সরাসরি বাণিজ্য মেলায় যাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ.এইচ.এম আহসান।
শনিবার বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
এ.এইচ.এম আহসান বলেন, ‘মেলাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার বিষয় থাকে। সেজন্য ৫০ জনের আউটসোর্সিং করে নিরাপত্তার জন্য লোকবল নিয়োগ দিয়েছি। এছাড়াও পুলিশ-আনসার থাকবে। প্রয়োজনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে র্যাব কাজ করবে। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ১০০ জন ক্লিনার নিয়োগ করা হয়েছে। যাতায়াতের জন্য বিআরটিসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের বাস থাকবে। এবার ফার্মগেইট থেকেও বাসে উঠা যাবে। ফলে খুব অল্প সময় মেলা কেন্দ্রে আসা যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘এই মেলার মূল উদ্দেশ্য গার্মেন্টসের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে রপ্তানিকে কিভাবে বহুমুখী করা যায়। চেষ্টা করব লোকাল যে শিল্প আছে সেগুলোকে আরও উৎসাহিত করতে। আমাদের রপ্তানি ৬ গুন বেড়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বেশি উৎসাহিত করে বিদেশিদের আনি না। কারণ মাসব্যাপী তারা অনেকে আসতে চান না। তবে আমাদের লোকাল ইন্ড্রাস্ট্রিগুলোকে পরিচিত করাটাই অন্যতম লক্ষ্য। ভোক্তা অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেব মেলায় আগত দর্শনার্থীরা যেন প্রতারিত না হয়। আমাদের দেশে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের লোকজন আছে, তাদের অনেকে আসে। এবার আমরা তাদের একসঙ্গে আনার বিষয়ে উদ্যোগ নেব।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘গত দুই বছর রাস্তার কিছুটা সমস্যা ছিল। এবার রাস্তা অনেক ভাল, ফলে অনেক দর্শনার্থী আসবে বলে আশা করছি। চেষ্টা করেছি একটি ভাল মেলা আয়োজনের জন্য। প্রতিবছর পহেলা জানুয়ারি মেলার আয়োজন করলেও এবার নির্বাচনের কারণে কিছুটা পিছিয়েছে। এ মেলাটি মানুষের জন্য বার্ষিক একটা ঐতিহ্যবাহী মেলায় পরিণত হয়েছে।’
ইপিবি জানিয়েছে, এবারের বাণিজ্যমেলায় দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুর, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ অংশ নেবে। পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি দেশীয় পণ্য রপ্তানির বড় বাজার খোঁজার লক্ষ্য রয়েছে।
জানা গেছে, দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ সামগ্রী, চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর, ফার্নিচার ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে।
দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এ মেলা হতো শেরেবাংলা নগরে। করোনা মহামারির কারণে ২০২১ সালে মেলার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এরপর মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার মেলার আয়োজন করা হয় পূর্বাচলে বিবিসিএফইসিতে। এবার তৃতীয়বারের মতো স্থায়ী ভেন্যু বাংলাদেশ-চীন এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখন থেকে প্রতি বছর এখানেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আসর বসবে।