ফিতনা থেকে বেঁচে থাকার ৫ উপায়

ফিতনা থেকে বেঁচে থাকার ৫ উপায়

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : অসংখ্য পরীক্ষার সমষ্টি দুনিয়ার এই জীবন। পালাবদল করে পরীক্ষা আসতে থাকে। আর আল্লাহ যদি মুমিনের অন্তরকে সুদৃঢ় না রাখতেন, তা হলে তাদের ভেতরটা কষ্টে, আঘাতে দুমড়ে-মুচড়ে যেতো। মুমিন মুসলমান নিজেরাই এ মর্মে অবাক হয়ে যেতো! কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই দ্বীনের পথে মানুষের পদস্খলন ঘটিয়ে দিত এই পরীক্ষাগুলো।

মানুষের এ ধরনের পদস্খলন যে সব সময় ধীর গতিতে হবে, তাও না। আসলে দ্বীনের ওপর দৃঢ়তা স্রেফ কিছু উপদেশ শোনা বা বই পড়ার দ্বারা বজায় থাকে না। বরং তা বজায় থাকে তাৎক্ষণিক আমলে নেওয়ার দ্বারা। এর প্রমাণ আল্লাহর এই বাণী-

وَ لَوۡ اَنَّهُمۡ فَعَلُوۡا مَا یُوۡعَظُوۡنَ بِهٖ لَکَانَ خَیۡرًا لَّهُمۡ وَ اَشَدَّ تَثۡبِیۡتًا

‘…অথচ তাদের যে উপদেশ করা হয় তা যদি তারা কার্যকর করত, তা হলে এটি হতো তাদের জন্য কল্যাণকর এবং অধিকতর দৃঢ়তা ও অবিচলতার প্রমাণ।’ (সুরা আন-নিসা: আয়াত ৬৬)

তাহলে কীভাবে এই ফিতনার যুগে মানুষ দ্বীনের ওপর অবিচল থাকবে?
এমন ৫টি উপদেশ বা আমল আছে, যা লিখে রাখা কিংবা আমল করার দ্বারা ফিতনা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। আমলগুলো হলো-

১. কোরআন অধ্যয়ন করা; কোরআন নিয়ে ভাবা

کَذٰلِکَ ۚۛ لِنُثَبِّتَ بِهٖ فُؤَادَکَ وَ رَتَّلۡنٰهُ تَرۡتِیۡلًا

এটা এজন্য যে, আমি এর (কোরআনের) মাধ্যমে তোমার হৃদয়কে সুদৃঢ় করব। আর আমি তা আবৃত্তি করেছি ধীরে ধীরে।’ (সুরা ফুরকান : আয়াত ৩২)

২. আগের রাসুলদের জীবনী পড়া

وَ کُلًّا نَّقُصُّ عَلَیۡکَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الرُّسُلِ مَا نُثَبِّتُ بِهٖ فُؤَادَکَ ۚ وَ جَآءَکَ فِیۡ هٰذِهِ الۡحَقُّ وَ مَوۡعِظَۃٌ وَّ ذِکۡرٰی لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ

‘আর রাসুলদের এসব সংবাদ আমি তোমার কাছে বর্ণনা করছি যার দ্বারা আমি তোমার মনকে স্থির করি আর এতে তোমার কাছে এসেছে সত্য এবং মুমিনদের জন্য উপদেশ ও স্মরণ।’ (সুরা হুদ : আয়াত ১২০)

৩. ইলমের ওপর আমল করা

وَ لَوۡ اَنَّهُمۡ فَعَلُوۡا مَا یُوۡعَظُوۡنَ بِهٖ لَکَانَ خَیۡرًا لَّهُمۡ وَ اَشَدَّ تَثۡبِیۡتًا

‘…যা করতে তাদেরকে উপদেশ দেওয়া হয়েছিল তারা তা করলে তাদের জন্য নিশ্চয়ই কল্যাণকর হতো এবং চিত্তস্থিরতায় দৃঢ়তর হতো।’ (সুরা আন-নিসা : আয়াত ৬৬)

৪. সতর্কতার সঙ্গে বন্ধু নির্বাচন করা

وَ اصۡبِرۡ نَفۡسَکَ مَعَ الَّذِیۡنَ یَدۡعُوۡنَ رَبَّهُمۡ بِالۡغَدٰوۃِ وَ الۡعَشِیِّ یُرِیۡدُوۡنَ وَجۡهَهٗ وَ لَا تَعۡدُ عَیۡنٰکَ عَنۡهُمۡ ۚ تُرِیۡدُ زِیۡنَۃَ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚ وَ لَا تُطِعۡ مَنۡ اَغۡفَلۡنَا قَلۡبَهٗ عَنۡ ذِکۡرِنَا وَ اتَّبَعَ هَوٰىهُ وَ کَانَ اَمۡرُهٗ فُرُطًا

‘তুমি দৃঢ় চিত্ত হয়ে তাদের সঙ্গে অবস্থান কর যারা সকাল-সন্ধ্যা তাদের প্রতিপালককে আহবান করে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের সন্ধানে। পার্থিব জীবনের শোভা ও চাকচিক্য কামনায় তুমি তাদের থেকে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিও না। তুমি তার আনুগত্য কর না যার অন্তরকে আমি আমার স্মরণ হতে উদাসীন করে দিয়েছি, যে নিজের প্রবৃত্তির আনুগত্য করে আর যার কার্যকলাপ হচ্ছে সীমালঙ্ঘনমূলক।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ২৮)

৫. সবসময় দোয়া করা

يَا مُقَلِّبَ القُّلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِيْنِكَ

উচ্চারণ : ‘ইয়া মুকাল্লিবাল কুলুবি ছাব্বিত কালবি আলা দ্বীনিকা।’
অর্থ : ‘হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে আপনার দ্বীনের ওপর অটল রাখুন।’ (তিরমিজি ৩৫৮৭)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *