ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করবে কলম্বিয়া

ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করবে কলম্বিয়া

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ফিলিস্তিনকে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করবে লাতিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়া। যেসব বড় দেশ এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেবে, সেই সব দেশ থেকে অস্ত্র কেনা বাদ দেবে কলম্বিয়া। গতকাল সোমবার দেশটির প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো এ ঘোষণা দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) শেয়ার করা এক টুইটে তিনি এ ঘোষণা দেন। তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এক্সে গুস্তাভো পেত্রো ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত আল-শিফা হাসপাতালের একটি ভিডিও শেয়ার করেন। সেই টুইটে পেত্রো লেখেন, ‘গাজার আল-শিফা হাসপাতালে (ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন) নেতানিয়াহু গণহত্যা চালিয়েছেন। এই অবস্থায় কলম্বিয়া জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব পেশ করবে, যাতে ফিলিস্তিনকে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র হিসেবে গ্রহণ করা হয়।’

টুইটে পেত্রো আরও বলেন, ‘কলম্বিয়া সেই সব অস্ত্র উৎপাদক দেশের কাছ থেকে অস্ত্র কিনবে না, যারা জাতিসংঘে গাজায় যুদ্ধবিরতির আদেশ দেওয়ার প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে বা বিরত রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন রক্ষার জন্য লড়াই করতে হবে, যাতে বিশ্বে বর্বরতা বিস্তৃত হতে না পারে।’

কলম্বিয়া সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেনের কাছ থেকে অস্ত্র কিনে থাকে। এই দেশ তিনটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। এ ছাড়া কলম্বিয়া জাপান, আলবেনিয়া, ব্রাজিল, ইকুয়েডর, ঘানা, মাল্টা ও সুইজারল্যান্ডের কাছ থেকে অস্ত্র কিনবে না, কারণ এই দেশগুলো গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে অথবা ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।

গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিপরীতে বরাবরই সরব ভূমিকা পালন করছে কলম্বিয়া ও দেশটির প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। এর আগেও তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সব আদালতে মামলা দায়ের করার হুমকি দিয়েছেন। গত ১০ নভেম্বর তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর সরকারের আইনি দল আন্তর্জাতিক সব আদালতে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তার আগে কলম্বিয়ায় নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে দেশ ছাড়তে আহ্বান জানায় দেশটির সরকার। পরে গাজায় ইসরায়েলি নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে দেশটির সরকার ইসরায়েল থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নেয়।

উল্লেখ্য, গাজার উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পেত্রো লিখেছিলেন, তিনি ছোটবেলা থেকেই গাজার সংঘাতের বিষয়ে অবগত এবং তিনি জানেন ফিলিস্তিনিরা কী পরিমাণ যন্ত্রণা ও অন্যায়-অবিচারের শিকার হচ্ছে। ওই টুইটে তিনি আরও লেখেন, ‘বর্তমানে নব্য নাৎসিরা ফিলিস্তিনি জনগণ, তাদের স্বাধীনতা ও সংস্কৃতি ধ্বংস করতে চায়।’

গত ৯ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ অবরোধ আরোপের বিষয়টিকে ইঙ্গিত করে পেত্রো বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সমাজ কখনোই এমন নাৎসিবাদী আচরণ মেনে নিতে পারে না এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নাৎসিবাদের পুনরুত্থান গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’ এ সময় তিনি জানান, তিনি সব সময়ই সেই সব ঘৃণাবাদী মতবাদ প্রত্যাখ্যান করেন, যা আরেকটি ‘হলোকাস্টের’ সৃষ্টি করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *