ফিলিস্তিনিদের জন্য শায়খ আল-সুদাইসের দোয়া প্রার্থনা

ফিলিস্তিনিদের জন্য শায়খ আল-সুদাইসের দোয়া প্রার্থনা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ফিলিস্তিনের পবিত্র জেরুজালেম ও মসজিদুল আকসায় শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা, ফিলিস্তিন জাতির জীবনের নিশ্চয়তা এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে সৌদি আরব। ফিলিস্তিন ইস্যুতে সৌদি আরবের দৃঢ় অবস্থানের প্রশংসা করেছেন মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান ও খতিব শায়খ ড. আবদুর রহমান আল-সুদাইস। গত ১০ অক্টোবর এক বিবৃতিতে পবিত্র মসজিদুল হারামের প্রেসিডেন্সি অব রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স এ তথ্য জানায়।

শায়খ আল-সুদাইস বলেন, ‘সৌদি আরবের বাদশাহ এবং সব নাগরিকের অন্তরে ফিলিস্তিন ইস্যু ও পবিত্র জেরুজালেমের অবস্থান।

ফিলিস্তিন জাতির ন্যায্য অধিকার অর্জন, তাদের সম্মানজনক জীবনযাপন নিশ্চিত করা এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সৌদি আরব ও এর নাগরিকরা তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। ফিলিস্তিনিদের অধিকার পুনরুদ্ধারে সৌদি আরবের দৃঢ় অবস্থানের সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মুসলিমদের অন্তরে পবিত্র মসজিদুল আকসার বিশেষ অবস্থান রয়েছে। তাই ফিলিস্তিন ইস্যুতে সৌদি আরবের সমর্থন ও প্রচেষ্টা ধর্মীয় মনোভাব অনুকরণের বহিঃপ্রকাশ।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে এসব প্রচেষ্টা আরব ও মুসলিম জাতির কর্তব্য পালনের অংশ। এখানে রয়েছে পবিত্র মসজিদুল আকসা, যেখানে শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ইসরা হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেছেন, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
(সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ১)

তা ছাড়া রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘(ইবাদতের উদ্দেশে) তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্যত্র ভ্রমণ করা অনুচিত। পবিত্র মসজিদুল হারাম, আমার এই মসজিদ ও মসজিদুল আকসা।’ (মুসলিম, হাদিস : ৮২৭) অন্যত্র রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘পবিত্র মসজিদুল হারামে এক রাকাত নামাজ পড়া এক লাখ রাকাত নামাজের সমান, আমার মসজিদে (মসজিদ-ই-নববী) এক রাকাত নামাজ পড়া এক হাজার রাকাত নামাজের সমান এবং বাইতুল মাকদাসে এক রাকাত নামাজ পড়া ৫০০ রাকাত নামাজের সমান।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ : ৪/১১)

ইসরায়েলের বর্বর হামলার সমালোচনা করে শায়খ আল-সুদাইস বলেন, ‘পবিত্র মসজিদুল আকসার সউচ্চ অবস্থান অম্লান থাকবে। ফিলিস্তিনিদের অধিকার হরণে ইসরায়েলের বর্বর আচরণ পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।

কোনো ধর্ম বা রাষ্ট্রীয় নীতিমালা এর সমর্থন করে না। তারা শত্রুতামূলক আচরণের মাধ্যমে পবিত্রতা ও মর্যাদা বিনষ্ট করছে এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকার হরণ করছে। আমরা মহান আল্লাহর কাছে পবিত্র মসজিদুল আকসা, ফিলিস্তিন জাতি ও মুসলিমদের পবিত্র স্থানগুলোর সুরক্ষার জন্য বিনীতভাবে প্রার্থনা করি এবং সারা বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় দোয়া করি।’

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এতে ইসরায়েলে অন্তত ১ হাজার দুই শ জন এবং গাজায় ১ হাজার দুই শয়ের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। টানা ছয় দিনের রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধে মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়ে পড়ে গাজা অঞ্চল। চলমান এই সংঘর্ষে ফিলিস্তিনিদের প্রতি নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে সৌদি আরব। গাজার চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাখোঁসহ বিভিন্ন জনের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান।

সূত্র: জেনারেল প্রেসিডেন্সি বিভাগ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *