১০ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ২০শে জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

ফুল ভাসাতে গিয়ে নদীতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আজ বুধবার সকালে মেয়ে মৈত্রী চাকমা (৭) বান্ধবীদের সঙ্গে ফুল তুলে চেঙ্গী নদীতে ভাসাতে যাবে। মৈত্রী চাকমা মা–বাবাকে আগের রাতে বলে রেখেছিল ভোরবেলায় ঘুম থেকে জাগিয়ে দেওয়ার জন্য। তাই মেয়েকে ঘুম থেকে জাগিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছিলেন মা মনীষা চাকমা। এটাই ছিল মা-মেয়ের শেষ দেখা। আজ ফুল ভাসাতে গিয়ে খাগড়াছড়ি সদরের কমলছড়ি এলাকার চেঙ্গী নদীতে ডুবে মারা যায় সে।

মনীষা চাকমা মেয়ের পাশে ভিড়তে দিচ্ছেন না কাউকে। বিজুর নতুন ড্রেস ধরে মেয়ের লাশের পাশে বসে আছে তিনি। একটু পরপর মেয়েকে নতুন ড্রেস দেখিয়ে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন। জড়ো হওয়া সবাইকে বলছেন, ‘কথা কম বলেন সবাই। আমার মেয়ে ঘুমাচ্ছে, একটু পরই জেগে উঠবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার মূল বিজু, সবাই আসবেন আমাদের বাড়িতে।’

কমলছড়ি এলাকার বাসিন্দা রতন চাকমা ও মনীষা চাকমার একমাত্র মেয়ে মৈত্রী চাকমা।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, সকাল আটটার দিকে তিন-চারজন বান্ধবী মিলে চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসাতে যায়। এ সময় পা পিছলে মৈত্রী চাকমা গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। পরে তার সঙ্গে থাকা বান্ধবীরা পাশের সড়ক দিয়ে হেঁটে যাওয়া ব্যক্তিদের ডাকেন। স্থানীয় লোকজন সবাই মিলে এক ঘণ্টা চেষ্টার পর তার লাশ উদ্ধার করেন।

রতন চাকমার ভাই জ্ঞান জ্যোতি চাকমা বলেন, ‘মৈত্রী চাকমা কমলছড়ি মুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। রতন চাকমা আর মনীষা চাকমার একমাত্র মেয়ে মৈত্রী। তাদের বড় মেয়েও দুই বছর আগে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। এই মেয়েকে ভেবে কোনোমতে জীবন পার করছে। জানি না এখন কীভাবে বাঁচবে তারা। তাদের যে কীভাবে সান্ত্বনা দেব, বুঝতে পারছি না।’

খাগড়াছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

শেয়ার করুন


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ১৯৮৬ - ২০২৩ মাসিক পাথেয় (রেজিঃ ডি.এ. ৬৭৫) | patheo24.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com