ফুসফুস ক্যানসারে সচেতন হোন

ফুসফুস ক্যানসারে সচেতন হোন

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ফুসফুস। অযত্ন, অবহেলা ও অত্যাচারের ফল ফুসফুস ক্যানসার। এর উৎপত্তি ফুসফুসে হলেও ধীরে ধীরে মস্তিষ্কসহ শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বজুড়ে ৮০ শতাংশ ফুসফুসের ক্যানসারের অন্যতম কারণ ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্য সেবন। এ ছাড়া যাঁরা দূষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বা ধুলাবালুতে কাজ করেন, তাঁদের ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

ফুসফুসের ক্যানসারের উপসর্গগুলো প্রাথমিক অবস্থায় বোঝা যায় না। সাধারণত শেষ পর্যায়ে এসে রোগ ধরা পড়ে। কখনো কখনো লক্ষণ প্রকাশের পরও অনেকে না বুঝে অবহেলা করেন। ফলে অবস্থা জটিল হয়ে যায়। তাই অবহেলা না করে উপসর্গ প্রকাশ পাওয়ামাত্র দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কারা ঝুঁকিতে

● যাঁরা নিয়মিত ধূমপান করেন বা অন্য কোনো উপায়ে তামাক সেবন করেন, তাঁদের আক্রান্তের হার অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি। এমনকি পরোক্ষ ধূমপানের কারণেও ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই পরিবারে একজন ধূমপায়ী থাকলে বাকিরা পরোক্ষ ধূমপানের মাধ্যমে ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

● পেশাগত কারণে যাঁরা অ্যাসবেস্টস কারখানায় বা ধুলাবালুতে কাজ করেন, তাঁদের ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।

● গ্রামের চেয়ে শহরাঞ্চলে বায়ুদূষণের মাত্রা অনেক বেশি থাকে। যানবাহন, কলকারখানার ধোঁয়া প্রভৃতি কারণে শহরের বাতাস দূষিত হয়। ফলে শহরে বসবাসকারীদের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

● যাঁদের রেডিয়েশনের মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে হয়, তাঁরাও ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারেন।

● এ ছাড়া যক্ষ্মা, ফুসফুসে পানি আসা, ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ), শ্বাসনালির প্রদাহজনিত রোগ ও ফুসফুসের অন্যান্য রোগে আক্রান্ত থাকলে বা পরিবারে কারও ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

উপসর্গ

দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট। হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া। শরীর অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে যাওয়া। একটানা খুসখুসে কাশি। শ্বাস নিতে বা কাশি দিতে বুকে ব্যথা হওয়া। অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ বা অবসাদ। জ্বর ও শরীরব্যথা। ক্ষুধামান্দ্য। গলাভাঙা বা স্বর পরিবর্তন। বারবার বুকে সংক্রমণ। কাশি বা কফের সঙ্গে রক্তপাত।

চিকিৎসা

ফুসফুসের ক্যানসারের চিকিৎসায় সার্জারি, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপির ব্যবহার রয়েছে। এ ছাড়া টার্গেটেড থেরাপি বা ইমিউনো থেরাপির ব্যবহারও বেড়েছে।

প্রতিরোধ

● ফুসফুসের ক্যানসারের টিকা বা প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তাই এই ক্যানসার প্রতিরোধে সচেতন হতে হবে।

● ধূমপান বর্জন করা, পরোক্ষ ধূমপান এড়িয়ে চলা এবং ফুসফুসের যেকোনো সমস্যায় অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

লেখক: লেখা:ডা. এ এফ এম কামাল উদ্দীন, ক্যানসার বিশেষজ্ঞ, ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *