`দীর্ঘ চার বছরে পাঠকের মৃত্যু গল্পের পাঠকের মত আমার ভিতরের পাঠক মনটাও মরে গিয়েছিল’
চার বছর আগের কথা। এক সন্ধ্যায় আব্বুর কাছে “হ্যালো মাওলানা” বইটির সন্ধান পাই। উপন্যাসের প্রতি বরাবরই আমার আগ্রহ কম। কিন্তু “হ্যালো মাওলানা” নাম শুনে বইটি পড়ার আগ্রহ জন্মে। তখন বইটি ছোট একটি খণ্ড আকারে প্রকাশ পেয়েছিল।
একদিনেই পড়ে শেষ করে ফেলেছিলাম। শেষের পাতায় লেখা ছিল পাঠকের মতামত পেলে দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হবে। তখন ছোট ছিলাম। পাঠ-প্রতিক্রিয়া কি! কিভাবে লিখে? তার কিছুই আমার আয়ত্তে ছিল না। তবুও কচিঁ হাতে কলম ধরেছিলাম। কিছু একটা লিখেছিলাম। কিন্তু কি কারণে যেন আমার ছোট আনাড়ি হাতের লেখাটা লেখক পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। আব্বুর কাছে বেশ কয়েকবার জানতে চেয়েছিলাম যে, ২য় খণ্ড কবে প্রকাশ পাবে? আব্বু বলতেন, শীঘ্রই প্রকাশ পাবে। এই হবে হবে করে চারটি বছর পার হয়ে যায়। আর দীর্ঘ চার বছরে পাঠকের মৃত্যু গল্পের পাঠকের মত আমার ভিতরের পাঠক মনটাও মরে গিয়েছিল। চার বছর পর বইটি পুনরায় এবং খুব বড় পরিসরে প্রকাশিত হয়। এবারও খুব তাড়াতাড়ি বইটি আমার হাতে আসে। সেদিনই পড়া শুরু করি।
তিনদিনে পুরো ২টি খণ্ডই শেষ হয়ে যায়। নতুন করে পড়তে খুবই ভালো লেগেছে। লেখকের ভাষা শৈলী অত্যন্ত চমৎকার। উপস্থাপনা প্রশংসার দাবিদার। শব্দচয়ন অসাধারণ। বইতে দুইটি চরিত্র আমাকে খুব ভাবিয়েছে, মানুষ বিত্তশালী হলেই যে মানুষ হিসেবে ভালো হয়-এমনটা নয়।
যেমনটা লতিফ সাহেব! সমাজের একজন ধনবান প্রতাপশালী মানুষ, মসজিদ কমিটির সভাপতি কিন্তু এত কিছুর মাঝেও তার ভিতরে একটা নোংরা মানসিকতা, লোভী মন বাস করছিল। ইদ্রীস তার বিপরীত হোক না সে একজন ড্রাইভার কিন্তু তার ভিতর একটা প্রতিবাদী মন ছিল।
মাওলানার দ্বীনদারি, দৃঢ়তা অতুলনীয়। জোবায়দার বুদ্ধিমত্তা অসাধারণ। সবমিলিয়ে বইটি আমার খুব ভালো লেগেছে। বলা বাহুল্য! বইটিতে আমার ভাষা মানে ময়মনসিংহের ভাষা উল্লেখ রয়েছে এটা আমার জন্য অত্যন্ত অনন্দদায়ক। আমার মনে হয়েছে বইটি যে জায়গায় সমাপ্ত হয়েছে সেটি এক সুন্দর সমাপ্তি।