৯ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ দরকার’

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে শিক্ষা দর্শন, শিক্ষা ভাবনা সেটির ওপর ভিত্তি করেই বঙ্গবন্ধু কন্যার দিক নির্দেশনায় সামনে এগিয়ে যেতে চাই। অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়বার জন্য বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়বার জন্য যে সোনার মানুষ দরকার সেই সোনার মানুষ গড়ার হাতিয়ার তো শিক্ষা। শিক্ষার্থীরা যাতে বিজ্ঞান মনস্ক আধুনিক দক্ষ যোগ্য মানবিক মানুষ হিসেবে তৈরি হবে। পরমতসহিষ্ণু মানুষ হবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্র-সৃষ্টি বিপ্লব: স্বাধীনতার ৫০ বছরে অগ্রগতি ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক আলোচনা এবং ‘বাংলাদেশ : সংগ্রাম, সিদ্ধি, মুক্তি’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যকে হত্যা করা হয়েছিল। এই দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে সূত্রপাত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর উত্তরাধিকার বঙ্গবন্ধু কন্যা এটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। একারণে আজকে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত।’

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে একমাত্র চীনারা আমাদের ওপরে থাকবে। কিন্তু পৃথিবীর আর কোনো ভাষা বাংলাদেশের মাতৃভাষার সমকক্ষ হতে পারবে না। পৃথিবীতে যারা মা, মাতৃভাষা ও মাতৃভূমি- এ তিনটির সঙ্গে কোনোরকমে আপস করে, সে কখনো মানুষ না। এ তিন জায়গায় কোনো আপস নয়। আমি মনে করি, আমি পৃথিবীর দশটা ভাষা জানতে পারি কিন্তু আমার মায়ের ভাষার সঙ্গে তুলনার কিছুই নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ভাগ্যবান এ দিক থেকে যে, পৃথিবীতে ফাইভ-জি এর সুচনা হয়েছে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশ মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে যে ফাইভ-জি এর যুগে যাবে এটা হয়তো উন্নত দেশের কেউ চিন্তাভাবনা করেনি। করোনার মধ্যে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকের ডিজিটাল প্রযুক্তি কাহাকে বলে তা ভালোভাবে অনুভব করেছে। এ সময়ে আমাদের জীবন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আমরা এখনো কিন্তু পিছিয়ে পড়িনি।’

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশের ৫০ বছরের যে অগ্রগতি তার প্রতিবন্ধকতাও আমরা চিহ্নিত করতে চাই। চিহ্নিত করে আমাদের আগামীর যে যাত্রা- যেখানে আগামী ৫০ বছরে, শতবর্ষে বাংলাদেশ এক ভিন্ন ও মানবিক বাংলাদেশ হবে। পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয় সে আহ্বান আমরা সবসময় রাখতে চাই।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, ‘তোমরা দিনভর ক্লান্ত হয়ে শেষ বেলায় পরম তৃপ্তির সন্ধানে মায়ের কাছে ফেরো। তৃষ্ণার জায়গা থেকে যদি আমি ভাবি সন্তানের এই তৃষ্ণা মায়ের কাছে যেমন বেশি। বন্ধুর কাছে যেমন ভালোবাসার টান। এগুলো যদি পূরণ হয় তাহলে একটা পূর্ণতা পায়। তোমরা শিক্ষার্থীরা কী ভেবেছো- এই দেশ মাতৃকায় আমরা শ্বাস-প্রশ্বাস নেই। হাজার বছরের বঞ্চনার ধারাবাহিকতায় যেই দেশমাতৃকা সৃষ্টি হয়েছিল ৫০ বছর পূর্বে। সেই দেশের একটা তৃষ্ণা আছে। সেও ভালোবাসা চায়। আমরা যখন আমাদের প্রিয় মাতৃভাষাকে কোথায়ও অসুন্দরভাবে উপস্থাপন করি, যখন শুদ্ধভাবে বাংলা ভাষা উচ্চারণ করতে পারি না। তখন দেশমাতৃকা কষ্ট পায়। আমরা যখন দুর্নীতিতে আচ্ছাদিত হই তখন প্রিয় স্বদেশ মুখ থুবড়ে পরে। মনে রেখ দেশ তোমার প্রতি বিমুখ হলে প্রকৃতি তোমার প্রতি বিমুখ হলে তুমি আরও বেশি মুখ থুবড়ে পড়বে। যেখান থেকে কেউ বের হতে পারবে না। একারণেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রসেনানির ভূমিকা পালন করতে হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক আবদুস সালাম হাওলাদার, সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড এর আহ্বায়ক শ্রী সম্যব্রত দাস, ভারতের জাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অশোক রঞ্জন ঠাকুর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক পবিত্র সরকার।

শেয়ার করুন


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ১৯৮৬ - ২০২৩ মাসিক পাথেয় (রেজিঃ ডি.এ. ৬৭৫) | patheo24.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com