বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট স্থল নিম্নচাপটি লঘুচাপে পরিণত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট স্থল নিম্নচাপটি লঘুচাপে পরিণত

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট স্থল নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে গত কয়েকদিনের মতো মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে থেকেও দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এরফলে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও অফিসগামীরা পড়েন বিপাকে।

লঘুচাপ অব্যাহত থাকায় আজ সারাদিন থেমে থেমে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সমুদ্রবন্দরে আগের মতোই ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত এবং নদী বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতেও বলা হয়েছে। পাশাপাশি আজকেও ১ থেকে ২ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে খেপুপাড়ায় ১১৬ মিলিমিটার। এছাড়া কক্সবাজারে ৮৭ ঢাকায় ৩২, চট্টগ্রাম ৫, রংপুরে ৩, রাজশাহীতে ৫৩, খুলনায় ২৩, সিলেটে ৩৮ এবং বরিশালে ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া সকাল থেকে এখন পর্যন্ত অর্থাৎ ভোর ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল, উড়িষ্যা, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া ও বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

এদিকে সর্বশেষ আবহাওয়া পরিস্থিতিতে বলা হয়, সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সমুদ্র বন্দরগুলো, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসাথে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর উপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *