বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করা এখন লক্ষ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করা এখন লক্ষ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই এখন সরকারের লক্ষ্য।

বুধবার মাতৃভাষা দিবসের সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

বাংলা পৃথিবীর ‘অন্যতম ভাষা’ মন্তব্য করে হাছান বলেন, “সারা পৃথিবীতে ৩৫ কোটির বেশি বাংলা ভাষাভাষী মানুষ আছেন। সম্ভবত ৬ কিংবা ৭ নম্বর অবস্থানে আছে বাংলা ভাষা। আমাদের এখন লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।“

রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালির রক্তে রঞ্জিত হয় রাজপথ; ওই রক্তের দামে এসেছিল বাংলার স্বীকৃতি আর তার সিঁড়ি বেয়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।

সেই ইতিহাস তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান জেলখানায় বসে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন ২১ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ দিবস পালিত হবে।

“এছাড়া কানাডা প্রবাসী দুজন বাঙালির উদ্যোগ এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্বরিৎ সিদ্ধান্তে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠানোর পর এটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়।“

১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। এর মধ্য দিয়ে বাঙালির সেই আত্মত্যাগের দিনটি বিশ্বের প্রতিটি মানুষের মায়ের ভাষার অধিকার রক্ষার দিন হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

ভাষাভাষীর সংখ্যার দিক থেকে বাংলা এখন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ভাষা। সে বিবেচনায় বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করে নেওয়ার দাবি দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশ সরকারও সেই দাবির বিষয়টি জাতিসংঘে নিয়েছে বিভিন্ন সময়ে।

তারপরও কেন তা হয়নি, তার ব্যাখ্যা তিন বছর আগে এক অনুষ্ঠানে দিয়েছিলেন তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেছিলেন, বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার প্রক্রিয়া ‘নিজস্ব অর্থায়নের’ শর্তের কারণে থমকে আছে।

২০২১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, বাংলাকে দাপ্তরিক ভাষা করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের কোনো আপত্তি নেই। তবে সেজন্য যে খরচ হবে, তা বাংলাদেশকে বহন করতে হবে। প্রাথমিক আলোচনায় সেজন্য প্রতি বছর ৬০০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।

“তারা বলেছে, প্রথম পাঁচটি ভাষা হয়েছিল জাতিসংঘ যখন সৃষ্টি হয়, পরবর্তীতে একটি নতুন ভাষা হয়েছে যে আরবি। এরপর প্রায় ১৯ বছর আরবি ভাষাভাষী দেশগুলো এর খরচ বহন করেছে। জাতিসংঘ সবসময় খরচ নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন থাকে।”

মোমেন সেদিন বলেছিলেন, জাপানি, হিন্দি ও জার্মান ভাষার জন্যও একই প্রস্তাব করা হয়েছিল। নিজস্ব খরচ বহনের শর্তের কারণে সেগুলোও দাপ্তরিক ভাষা হয়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *