বাংলাদেশের সাথে সরাসরি টাকা-রুপির লেনদেন করবে ভারত

বাংলাদেশের সাথে সরাসরি টাকা-রুপির লেনদেন করবে ভারত

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : মার্কিন ডলার নিয়ে সৃষ্ট সংকটের প্রেক্ষাপটে এখন বিকল্প মুদ্রায় লেনদেন ব্যবস্থা চালুর বিষয়টি আলোচনায় আসছে। গত আগস্টে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই) বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনের ক্ষেত্রে টাকা ও রুপি ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছে।

একটি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ২৪ স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এক চিঠিতে রপ্তানিকারকদের এই নির্দেশনা দিয়েছে। তবে সেটি ওই সময় প্রকাশ করা হয়নি।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন ডলার এবং অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার এক্সপোজার (পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা) না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং প্রতিবেশী দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে এই নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য কার্যক্রম চলমান থাকবে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্রমবর্ধমান খাদ্য ও জ্বালানির দাম পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে এসেছে। ফলে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতো বৈশ্বিক ঋণদাতাদের কাছে যেতে হয়েছে।

গত শুক্রবারের বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে এখন ৩৭ বিলিয়ন ডলার। যা একই সময়ে এক বছর আগে ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে ৪.৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চেয়েছে। তবে যে খাত থেকে ঋণ চাওয়া হয়েছে তা থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি দেওয়া হয় না। কম আয়ের দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে আইএমএফের রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ট্রাস্ট আর্থিক সহায়তা ও ঋণ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ এই ট্রাস্টের অধীনে ঋণ চেয়েছে।

স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার পাঠানো চিঠির বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আনুমানিক ৫০০ মিলিয়ন ডলারের এক্সপোজার (পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা) রয়েছে। এটিকে আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির চলমান পরিস্থিতিতে এটি কমানো হবে।

বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও ডলারের ওপর নির্ভরতা কমানোর বিষয়ে জোর দিয়েছেন। গত সপ্তাহে তিনি বলেছেন, “স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেনে কোনো সমস্যা নেই। অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করছে।”

তবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম রয়টার্সকে বলেছেন, “ভারতের সঙ্গে স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্যের বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি।”

একজন রপ্তানিকারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেছেন, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো এবং আমদানিকারকরা রুপিতে বাণিজ্য করতে ইচ্ছুক নয়। এছাড়া ভারত এখনো স্পষ্ট করেনি রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন করলে ডলারের মতো একই সুবিধা পাওয়া যাবে কি-না।

তিনি আরও বলেন, “স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার নির্দেশনা খুবই উদ্বেগজনক। বাংলাদেশ ভারতের একটি প্রধান ব্যবসায়িক অংশীদার। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মতো একটি প্রিমিয়ার ব্যাংক যদি এক্সপোজার না নেয়, তাহলে বাণিজ্য কীভাবে বাড়বে? এটি বরং নিম্নমুখী হতে পারে।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *