বাগানের ছোট বৃক্ষটি আজ বে—শ বড়
কাদির চৌধুরী বাবুল : বৃক্ষটি বড় করতে আমাদের দিনের পর দিন যত্ন নিতে হতো। গোড়ায় পানি দিতে হতো সকাল বিকাল। গোগ্রাস করতে দেইনি। ছাগল লাফ দিয়ে পাতা চাটতে দেইনি কোন দিন।
একবার শৈশবে আগুনমুখো বাতাসে পত্রপল্লব জ্বলসে গিয়েছিল; সে যে কী ভয়াবহ!
বাগানের ছোট বৃক্ষটিকে বাঁচাতে হবে। আতুর বোনটিও যোগ দিয়েছিল আমার সাথে। তাই সেদিনের তার উপস্থিত যত্নের কারণে আগুনমুখো বাতাসে বাগানের ছোট বৃক্ষটি জ্বলে পোড়ে তুবড়ে পড়েনি।
শহরের ডাক্তার বাবু বিস্তারিত জেনে বলেছিলেন— আতুর বোনটির বুদ্ধিমত্তায় নাকি রক্ষা হয়েছিল, তাই বৃক্ষটির শৈশবে মৃত্যু হয়নি। তারপর থেকে কড়া রোদ্রে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছায়া দিতে হতো প্রতিদিন।
এ মিশনে আতুর বোনটি ছিলো সবার আগে। রাতদিন যত্নে আগুনমুখো বাতাসের হাত থেকে বেঁচে যায় বাগানের ছোট বৃক্ষটি৷ তারপর নতুন করে কুঁড়ি দিয়েছিল। পত্রপল্লব মেলবে বলে আতুর বোনটি বিরাট দায়িত্ব নিয়েছিলো। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় বৃক্ষ খাদ্য গ্রহণ করলেও আতুর বোনটির অক্লান্ত যত্ন ও ভালোবাসা কম ছিলো না।
প্রিয় বৃক্ষটির ফল পাবো বলে যখন ভাবছি— দেখলাম, ক্ষুদে লেদাপোঁকা পরতে পরতে আশ্রয় নিয়েছে। ওই গরল প্রকৃতির ওই পোঁকাগুলেকে কোনো দিন দেখিনি। গাছটি বড় হতে না হতেই বাসা বাঁধল লেদাপোঁকা। দুইই বিষাক্ত। কে জানতো এমন হবে? বৃক্ষের অর্গাননে বসে আছে অসংখ্য বিষাক্ত পোঁকা আর লেদাপোঁকা। ওই বিষাক্ত পোঁকার আশ্রয়াভরণ্য বৃক্ষটি এখন দুঃস্বপ্নের। বৃক্ষের পুরো অবয়বে বিষ আর বিষ একবার বিষমুখে হা করলে গা যেনো বিষাক্ত হয়ে ওঠে।
লেখক : কবি ও শিক্ষক
১০.০৭.২০২০