বাজারে চালের দামে বড় কোনো পরিবর্তন নেই

বাজারে চালের দামে বড় কোনো পরিবর্তন নেই

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বাজারে চালের দামে বড় কোনো পরিবর্তন নেই। উচ্চমূল্য স্থিতিশীল হয়ে আছে সব ধরনের চালে। মোটা চালের দাম মাঝে পাইকারিতে কেজিপ্রতি দু-এক টাকা কমলেও দুই সপ্তাহ ধরে আবার ৫০ টাকার ওপরে উঠেছে।

এদিকে গত শীতের মৌসুম থেকে এবারের মৌসুমে সবজির বাজার বাড়তি। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশ কয়েক পদের সবজিতে কেজিপ্রতি দাম ৫ থেকে ১৫ টাকা বেশি। কেজিপ্রতি চিনির দাম ৫ টাকা বাড়লেও আটা-ময়দা, মসুর ডাল, সয়াবিন তেলসহ অধিকাংশ নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য স্থিতিশীল।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা ও মালিবাগ বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোটা চালের কেজি ৫০ টাকার ওপরেই বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের বিআর ২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ টাকার ওপরে। মিনিকেট চাল মিলছে সর্বোচ্চ ৭৫ টাকার মধ্যে। আর নাজিরশাইল চালের দাম পড়ছে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায়। আটা-ময়দা, মসুর ডাল ও সয়াবিন তেলের মতো পণ্যের দাম আগের মতোই আছে।

মালিবাগ বাজারের রোজ জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা আবদুল জলিল বলেন, নতুন চাল বাজারে এলেও দামে বড় কোনো পরিবর্তন নেই। দাম বাড়তি বলে বেচাকেনাও কমেছে।

এদিকে বাজারে বেগুন, বরবটি, করলা ও ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়। গত বছর এই সময়ে এসব সবজি ৫০ টাকার আশপাশে ছিল। শিম ও টমেটোর দামও গত মৌসুমের এই সময় থেকে কেজিতে অন্তত ১০ টাকা বেশি দামে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর ছিল কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।

কাঁচা মরিচের দামও গতবার থেকে বাড়তি। গতকাল বাজারে বিক্রি হয়েছে কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত বছর ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। তবে মুলা, পেঁপে, গাজর ও শসার কেজি গতবারের মতো ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি বাঁধাকপি ও ফুলকপির দামও গত বছরের মতো ৩০ থেকে ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

মানভেদে নতুন আলুর দাম পড়ছে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। তবে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি লাউ, মিষ্টিকুমড়া। গত মৌসুমের এই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এবার ৭০ থেকে ৮০ টাকার নিচে লাউ মিলছে না। মিষ্টিকুমড়া আরেকটু কম থাকলেও ৬০ টাকার নিচে নয়।

রাজধানীর মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মিঠু বলেন, কাঁচাবাজার ওঠানামার মধ্যে থাকে। তবে শীতের মৌসুম শেষের দিকে সবজির দাম বেশ পড়ে যায়। এবার সেটা হয়নি। অবশ্য উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বেড়েছে। তাতে গতবারের চেয়ে এবার সবজির দাম বাড়তি।

বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি ও সাদা উভয় ডিমের দাম বেড়েছে। গত এক মাসের ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। ফার্মের মুরগির ডিম ডজনে বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। সোনালি মুরগির দাম পড়ছে কেজি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা।

খিলগাঁওয়ের ডিম বিক্রেতা মিশকাত হোসেন বলেন, ‘ডিমের দাম বাড়তির দিকে। তবে এবার দাম উঠছে ধীর গতিতে। পাইকারিতে আমরা যেভাবে কিনতে পারি, খুচরায় ডজনপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা লাভ রেখে বিক্রি করি। গত বছর ডিমের হালি ৫৫ টাকার ওপরে উঠেছিল। এবার সেই অবস্থায় যাওয়ার মতো সম্ভাবনা নেই।’

মাছের বাজারও স্থিতিশীল। ১৬০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে কম দামি মাছ পাঙাশ ও তেলাপিয়া। গরুর মাংসের কেজি ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে থাকলেও খাসির মাংসের দাম কিছু জায়গায় ১০০ টাকা বাড়তিতে ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।

বাজার সেরে বাসায় ফেরার পথে মৌচাকের আলেয়া বেগম বলেন, ‘বাড়তি দামের কারণে মাছ-মাংস খাওয়া কমিয়ে সবজি ও ডিম বেশি খাই। এসব পণ্যেরও দাম বাড়ছে। তাতে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের পরিবারের কষ্ট বেড়েছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *