বান্দরবানে অনুমোদন ছাড়াই বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি

বান্দরবানে অনুমোদন ছাড়াই বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : অনুমোদন ছাড়াই বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার নোয়াপতং ইউনিয়নের কানাইজোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের সেগুনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে উজাড় করার অভিযোগ উঠেছে।

এর আগেও দুই দফায় ১৫-১৬টি সেগুন গাছ কেটে বিক্রির অভিযাগ রয়েছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তবে সেগুন নয়, জংলি গাছ বলে দাবি ওই শিক্ষকের। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কার্যালয় ও প্রশাসন।

স্থানীয়রা জানায়, প্রধান শিক্ষক রত্নজয় তঞ্চঙ্গ্যার পরামর্শে বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটি ছোট-বড় মিলে ১২টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিক্রির বিষয়ে সম্মতি দেয়। এর মধ্যে সেগুন নয়টি, গামার একটি ও শীল কড়ই গাছ দুটি রয়েছে। গাছগুলো আনুিমানিক ৩৫-৪০ বছর আগে লাগানো হয়েছিল। ১০/১২ দিন আগে শ্রমিকরা এসে গাছগুলো কেটে টুকরা করে ফেলে।

এরই মধ্যে মজুদ হওয়া গাছের গুঁড়ি থেকে এক ট্রাক পাচারের অভিযোগ উঠেছে। অবশিষ্ট গুঁড়িগুলো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এছাড়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিদ্যালয়টির পাকা ভবন করার সময়সহ কাউকে কিছু না জানিয়ে দুই দফায় ১৫-১৬টি বড় বড় সেগুন গাছ বিক্রি করেন প্রধান শিক্ষক রত্নজয় তঞ্চঙ্গ্যা।

শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গিয়েছে, কানাইজোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সেগুন ও গামার বৃক্ষের বেশ কয়েকটি গাছের গুঁড়ি পড়ে রয়েছে। কেটে ফেলা গাছগুলোর কয়েকটি গোড়ার দেখা মিলেছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, কানাইজোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের গাছ কাটা ও বিক্রিসংক্রান্ত কোনো আবেদন এবং অনুমোদন নেই।

গাছ কাটার বিষয় স্বীকার করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মংক্যচিং মারমা প্রকাশ ঙোয়েচিং। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, গত ২১ অক্টোবর কমিটির সভায় ১২টি গাছ কাটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু গাছগুলো বিক্রির টাকা প্রধান শিক্ষক নিজে নিয়েছেন।

কত টাকায় বিক্রি করেছেন কিছুই জানি না। গাছ ক্রেতাকে আমি চিনি না। টাকার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলতে পারবেন। তবে গাছ কাটতে হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা অফিস থেকে অনুমোদন নিতে হয় তা আমি জানতাম না।

গাছ কেটে বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রত্নজয় তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি বলেন, পরিচালনা কমিটির সম্মতি নিয়ে গাছগুলো কাটা হয়েছে। কেটে ফেলা গাছগুলো সেগুন নয়, জংলি গাছ বলে দাবি ওই শিক্ষকের। তবে কার কাছে কত টাকায় গাছগুলো বিক্রি করেছেন, তা তিনি বলেননি।

গাছ কাটার বিষয় জানা নেই বলে জানিয়েছেন রোয়াংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম জাকারিয়া হায়দার। গাছ কাটা হয়ে থাকলে তা আইন লঙ্ঘন বলে জানান তিনি।

বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নোয়াপতং ইউনিয়নে বিদ্যালয়ের গাছ কাটাসংক্রান্ত অনুমোদন দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলক। অন্যথায় তা আইন লঙ্ঘন। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *