পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি পরাজয়ের ভয়ে নির্বাচনে যেতে ভয় পায়, তাই পথ হারিয়ে তারা পদযাত্রা করে বেড়াচ্ছে। আন্দোলনে জনগণ না থাকলে সেটা আন্দোলন নয়। বিএনপি সাধারণ জনগণকে নামাতে পারেনি।
মঙ্গলবার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার বঙ্গবন্ধু চত্বরে ২৩টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন, উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় উদ্বোধন ও মোশাররফ- ফজিলাতুন্নেছা বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘আন্দোলনে সাধারণ মানুষ থাকতে হয়। বিএনপির আন্দোলনে শুধু দলীয় নেতাকর্মীরা আছেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন-অর্জন সারা দুনিয়ায় সমাদৃত।’
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের জন্য নির্ঘুম রাত কাটান। আমাদের কোনো দোষ নেই। আমরা মূল্য দিচ্ছি। দোষ বড় বড় শক্তির। তারাই আজকে সারা বিশ্বকে সংকটে ফেলেছে। শেখ হাসিনা সংকট সামাল দিচ্ছেন। কয়েক দিন আগে আইএমএফ বলেছে, বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশ। বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে এবং বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।’
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘যারা কর্মীদের থেকে টাকা দিয়ে চাকরি দেয়, তারা ভালো মানুষ নয়। নেতা হয়ে গরিবের থেকে টাকা নিয়ে চাকরি দিলে ওই টাকা তার পরিশোধ করতে ১০ বছর লেগে যাবে। এই কথাটা ভেবে দেখবেন সবাই। সরকারের দুর্নাম হয় এমন কাজ করবেন না। মানুষের মনের ভাষা, চোখের ভাষা বুঝতে না পারলে নির্বাচনে তার প্রমাণ পাবেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে, নির্বাচনে এ দলকে হারানোর কোনো শক্তি বাংলাদেশে নেই। বাংলাদেশ, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে।
ওবায়দুল কাদের গতকাল দুপুরে নোয়াখালীতে তাঁর নির্বাচনী এলাকা কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট বাজারে হাজি ইদ্রিস চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে এখনো পাঁচ মাসের আমদানি রিজার্ভ রয়েছে। পাকিস্তানের কাছে এক সপ্তাহ আমদানি করার টাকা নেই। তার পরও মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলাম।’ ফখরুল এখনো পাকিস্তানের জয়গান গাচ্ছেন।”
ওবায়দুল কাদের দেশের নারীদের উদ্দেশ করে বলেন, বিএনপি আবারও ক্ষমতায় এলে বোরকা পরিয়ে ঘরে রাখবে। বাংলাদেশ আফগানিস্তান হয়ে যাবে। মেয়েরা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে পারবে না।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। ঐক্যবদ্ধ থাকা মানে স্মার্ট থাকা, শৃঙ্খলা মেনে চলা। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট কর্মী দরকার।’ মঞ্চে উপস্থিত নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কেউ বাকি নেই, সব নেতা। এত নেতা হলে কর্মীর কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।
সেতুমন্ত্রী বিএনপির নেতাকর্মীদের ইঙ্গিত করে বলেন, ‘যে হাত অস্ত্র নিয়ে আসবে, সেই হাত ভেঙে দেব; যে হাত আগুন নিয়ে আসবে, সেই হাত পুড়িয়ে দেব; যে হাত ভাংচুর করতে আসবে, সেই হাত গুটিয়ে দিতে হবে। আমরা আক্রমণ করব না। কিন্তু আক্রান্ত হলে ছাড় দেব না। খেলা হবে, ফাইনাল খেলা, হবে ডিসেম্বরে, আগামী ডিসেম্বরে।’
পরে ওবায়দুল কাদের কবিরহাট উপজেলা চত্বরে ৪৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আগে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সকালে ফেনী থেকে তাঁর নিজের গ্রামের বাড়ি কোম্পানীগঞ্জে আসার পথে ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের চার লেন কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। পরে তিনি কোম্পানীগঞ্জের সিরাজপুরে তাঁর মা-বাবার করব জিয়ারত করেন। কবর জিয়ারত শেষে তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় যান।