বিচারপতি খায়রুল হকের কারণে জাতি আজ ধ্বংসের দিকে : ফখরুল

বিচারপতি খায়রুল হকের কারণে জাতি আজ ধ্বংসের দিকে : ফখরুল

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই যে নির্বাচনব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেল, সংবিধান শেষ হয়ে গেল, এর জন্য দায়ী কিন্তু বিচার বিভাগের বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। তার কারণে জাতি আজ ধ্বংসের দিকে। যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়ে গেল, তখন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, এ জাতিকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হলো। আজ সমস্ত মানুষ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। আজ মানুষ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারেন না।’

বাংলাদেশে নির্বাচনব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘খালেদা জিয়া আদালতে ন্যায়বিচার পাননি। বিচারিক–সন্ত্রাসের কারণে তিনি আজ গৃহে অন্তরীণ। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। দলীয় তদন্ত কর্মকর্তা দিয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। একটা মামলায় তারেক রহমান খালাস পেলেন। যে বিচারক খালাস দিলেন, তাকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এই বিচারব্যবস্থা নিয়ে আমরা কী করতে পারি?’

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ঢাকা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব বলেন।

তিনি বলেন, ‘এই লুটেরা, দুর্বৃত্ত সরকারের বাজেট মানেই টাকা লুট। আরো টাকা লুট করা। তাই বাজেট নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই।’

পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পদ্মা সেতু হয়েছে ভালো কথা। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা বলছেন, আমি, আমরা তৈরি করেছি। কেন করেছেন? কেন করতে হয়েছে? কারণ, আপনারা চুরি করতে গিয়েছিলেন। বিশ্ব ব্যাংক টাকা দেবে বলেছিল। কিন্তু সেই বিশ্ব ব্যাংক আপনাদের কাছ থেকে টাকা তুলে নিল কেন? ঘটনা তো সত্য। মন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে হয়েছিল। এটাই বাস্তবতা।’

তিনি বলেন, ‘২০০৫ সালে জাপান সফরকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পদ্মা সেতুর ফান্ডিংয়ের (অর্থায়ন) ব্যাপারে তিনি (খালেদা জিয়া) কথা বলেছিলেন। পদ্মা সেতুর ভূমি অধিগ্রহণও খালেদা জিয়া সরকারের আমলে হয়েছিল। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে তিনি আর সেটা করতে পারেননি।’

এখন কেউ কথা বলতে সাহস পায় না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষ কথা বলতে ভয় পায়। একেই বলে সত্যিকারের ফ্যাসিজম। কিছুদিন আগেও অনেক শ্রদ্ধাভাজন মানুষ টক শোতে কথা বলতেন। পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। এখন কিন্তু কেউ কথা বলছেন না। এখন জীবনের নিরাপত্তা নেই।’

পাকিস্তান মিলিটারি শাসনের দেশ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘পাকিস্তানের বিচার বিভাগ কত শক্তিশালী, তাদের আইনজীবীরা শক্তিশালী। আর বিচার বিভাগ এতই শক্তিশালী যে তারা সরকার পরিবর্তন করে দিতে পারে।’

রাজধানীর জুরাইনে পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় আইনজীবীদের রিমান্ডে নেয়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘একজন আইনজীবীকে যদি রিমান্ডে যেতে হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাব? কোথায় বিচার পাব? এটা কীভাবে সম্ভব? আওয়ামী লীগ বিচারব্যবস্থাকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, কোনো মানুষের বিচার পাওয়ার সুযোগ নেই।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, বিএনপির আইন সম্পাদক কায়সার কামাল, বিএনপি নেতা মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহআইন সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল আবেদীন, ইকবাল হোসেন, আইনজীবী বোরহান উদ্দিন, আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী প্রমুখ।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *