বিদায়ী জুনে ৫৩৩টি যানবাহন দুর্ঘটনায় ৫৬৮ জন নিহত

বিদায়ী জুনে ৫৩৩টি যানবাহন দুর্ঘটনায় ৫৬৮ জন নিহত

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বিদায়ী জুন মাসে ৪৭৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১৩ জন নিহত এবং ৮২৬ জন আহত হয়েছেন। একই সময় রেলপথে ৪১টি দুর্ঘটনায় ৩৯ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৭টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, ৩৫ জন আহত এবং ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৩৩টি দুর্ঘটনায় ৫৬৮ জন নিহত এবং ৮৬৭ জন আহত হয়েছেন।

একই সময়ে ১৬০টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৬ জন নিহত এবং ১১৭ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৩.৬৮ শতাংশ, নিহতের ৩৭.০৫ শতাংশ ও আহতের ২৪.৬৩ শতাংশ।

গত মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। সেখানে ১২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২৭ জন নিহত ও ২৬৩ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে। সেখানে ২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ৫৮ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার (১৭ জুলাই) সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংগঠনটি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ২০৩ জন চালক, ১০৫ জন পথচারী, ৮৪ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫২ জন শিক্ষার্থী, ১০ জন শিক্ষক, ৯৮ জন নারী, ৪৭ জন শিশু, ২ জন সাংবাদিক, ১ জন চিকিৎসক এবং ১২ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন ৫ জন সেনাবাহিনীর সদস্য, ২ জন পুলিশ সদস্য, ১৬১ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৮৭ জন পথচারী, ৫৮ জন নারী, ৪০ জন শিশু, ৪৫ জন শিক্ষার্থী, ৪৪ জন পরিবহন শ্রমিক, ৯ জন শিক্ষক, ১ জন চিকিৎসক ও ৯ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে- জাতীয় মহাসড়কে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলাচলের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা; দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক অবাধ চলাচল করা; মোটরসাইকেল; ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়া; সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং; সড়কে বাতি না থাকা; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি; যানবাহনের ত্রুটি; ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো; সড়কে চাঁদাবাজি; পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন; অদক্ষ চালক; ফিটনেসবিহীন যানবাহন; বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো এবং রেলক্রসিংয়ে দায়িত্বরত ব্যক্তির অবহেলা, ফিডার রোড এবং আঞ্চলিক রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশগুলো হচ্ছে- মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ; ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস দেওয়া; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা; চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; সড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং অঙ্কন ও স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা; ডিজিটাল পদ্ধতিতে ট্রাফিক আইন প্রয়োগ করা; ঈদের আগে ৩ দিন আগে থেকে জাতীয় মহাসড়কে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলাচলের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করা; গণপরিবহন বিকশিত করা; নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা এবং নিয়মিত রোড সেফটি অডিট করা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *