বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রস্তুত পায়রার দ্বিতীয় ইউনিট

বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রস্তুত পায়রার দ্বিতীয় ইউনিট

বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রস্তুত পায়রার দ্বিতীয় ইউনিট

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : পূর্ণাঙ্গভাবে উৎপাদন শুরু করতে প্রস্তুত পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত কয়লা ভিত্তিক পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটটি গত দুই মাস ধরে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন করছে এখন বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনার জন্য প্রস্তুত। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী এলাকায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন পরীক্ষামূলকভাবে গত ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হয়।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের-বিসিপিসিএল প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মওলা বলেন, ‘প্রথম ইউনিট আমরা মে মাসে পুরোপুরি চালু করেছি। দ্বিতীয় ইউনিটও পরীক্ষামুলক উৎপাদন করছে। অনুমতি পেলে দ্বিতীয় ইউনিটও পিডিবিকে হস্তান্তর করার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।’

বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি- বিসিপিসিএল পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিক। এ কোম্পানিতে দেশের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইম্পোর্ট করপোরেশন-সিএমসি সমান মালিকানা রয়েছে। বিসিপিসিএল পায়রাতে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ২টি করে ইউনিট রয়েছে। এরমধ্যে প্রথম কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট গত মে মাস থেকে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে। দ্বিতীয় ইউনিট জুন মাসে পরীক্ষামূলক চালুর কথা থাকলেও করোনার কারণে তা পিছিয়ে যায়। পরে গত ২৫ আগস্ট থেকে দ্বিতীয় ইউনিট ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু করে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, কয়লাভিত্তিক পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুইটি ইউনিট একযোগে শুরু করা গেলে এখান থেকে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। যা দেশের বিদ্যুৎ খাতে এক নজির স্থাপন করবে। কারন এখন পর্যন্ত দেশের একক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়নি। জাতীয় গ্রিডে এ পর্যন্ত যোগ হয়েছে সর্বোচ্চ রেকর্ড সাড়ে ৪শ মেগাওয়াট।

পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পটুয়াখালী সদর হয়ে গোপালগঞ্জ জেলার মকসুদপুর উপজেলায় নির্মিত ৪০০-২৩০ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রে যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যোগ হবে। এ প্রসঙ্গে বিসিপিসিএল এর কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘এখন দুটি ইউনিটকে অর্ধেক লোডে চালাতে হবে। গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকার আমিনবাজার পর্যন্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মান শেষ হতে আগামী বছর লেগে যাবে। এ লাইনের কাজ শেষ হলে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ ঢাকায় আনা সম্ভব হবে।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ মালিকানায় নির্মিত পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে কম কয়লা পুড়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রুযক্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং আমদানি করা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল ক্লাবে প্রবেশ করলো। এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে এশিয়াতে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তমে। দক্ষিণ এশিয়ার ভারতে এ প্রযুক্তি সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়া চীন, জাপান মালয়েশিয়াতেও আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *