পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সঙ্কট থেকে বাংলাদেশসহ বিশ্বকে বাঁচাতে এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে ২০২৫ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক শক্তিতে বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী।
গতকাল শনিবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীতে রাজধানীর একটি হোটেলে অক্সফাম ইন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘মাল্টি স্টেকহোল্ডার কপ-২৮ প্রস্তুতি কর্মশালা’তে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সাবের হোসেন বলেন, ‘ফসিল ফুয়েল ফেজ আউট করে পৃথিবীর বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে রাখতে হলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাতিল করতে হবে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক শক্তিতে বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। এ নিয়ে আমরা যদি ঐক্যমত হতে না পারি, তাহলে আমরা আমাদের জলবায়ু অভিযোজনের ওপর বিশাল প্রভাব পড়বে। ইতিমধ্যে দেখছি ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৈশ্বিক তাপমাত্রাতে আমাদের ওপর কী প্রভাব পড়ছে (জলবায়ুজনিত)।’
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই আমাদের অভিযোজন খরচ বাড়ছে। গত বছর আমরা ৩.৪ মিলিয়ন ডলার আমরা নিজেদের থেকে দিয়েছি। এটি প্রতি বছরই বাড়ছে। এছাড়া আমরা জলবায়ু তহবিলের কথা বলি। জলবায়ু তহবিলে ১০০ বিলিয়ন ডলারের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো বাংলাদেশসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো পাবে। কিন্তু এই সংখ্যাটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক, এটাকে বিজ্ঞানসম্পন্ন করে নির্ধারণ করা জরুরি।’
জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্বে কর্মশালায় চারটি আলাদা আলাদা সেশনে কার্বন ট্যাক্স, জলবায়ু অর্থনীতি; জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন; বৈশ্বিক স্টকটেকিং; জীবাশ্ম জ্বালানি যুগ বাতিল করা, বিকল্প ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা (জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন), চ্যালেঞ্জ ও করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। যেখানে কপ-২৮ কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে আনা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি কপ-২৮ এ বাংলাদেশের অগ্রাধিকার ও পরিকল্পনা বিশেষত গ্লোবাল স্টকটেক, জীবাশ্ম জ্বালানি ফেজ আউট, বিকল্প জ্বালানি বা জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশনের গুরুত্ব নিয়ে আলাপ করেন।
পাশাপাশি কপ-২৮ এ কীভাবে সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনগুলো সরকারের সহায়ক হিসেবে এই প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদীক আহমেদসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থা, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং গণমাধ্যমকর্মীরা। অনুষ্ঠানটি আয়োজনে অক্সফাম ইন বাংলাদেশের সঙ্গে ছিল ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক সাউথ এশিয়া (কানসা) এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)।