পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : গুণীজনকে সম্মান দিলেই গুণী মানুষের জন্ম হয়। তাই সুমধুর কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত করে সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়া হাফেজে কুরআনদের বিশেষ সম্মাননা দিতে যাচ্ছে আলেম-ওলামা ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সংগঠন `সালসাবিল’।
বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের পরিচয় ও খ্যাতিকে যারা সুনামের শীর্ষে তুলে ধরেছেন, তারা হলেন বাংলাদেশের এসব হাফেজে কুরআনরা। সম্প্রতি সময়ে আরব বিশ্বসহ বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে গৌরবোজ্জ্বল ফলাফল অর্জন করেছেন। তাদের এ অর্জনে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে লাল সবুজের পতাকা।
আগামী ২৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পটিয়াস্থ আব্দুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত শানে রেসালাত সম্মেলনে সালসাবিল-এর উদ্যোগে বিশ্বসেরা হাফেজদের বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হবে। শানে রেসালাত মাহফিলে যাদের বিশেষ সম্মাননা দেয়া হবে তাদের মধ্যে অন্যতমরা হলেন-
নাজমুস সাকিব : ২০১২ সালে ভারতের ব্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠিতব্য প্রতিযোগিতায় এশিয়া মহাদেশের ২৭ দেশের প্রতিযোগিদের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ২০১৩ সালে দুবাই আন্তর্জাতিক কেরাত প্রতিযোগিতায় ৮৬ দেশের প্রতিযোগীদের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন। এ বছরই বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভিতে প্রচারিত ‘পিএইচপি-কোরআনের আলো প্রতিভার সন্ধানে’কেরাত প্রতিযোগিতায়ও প্রথম হন নাজমুস সাকিব।
২০১৪ সালে পবিত্র নগরী মক্কায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ৭৩ দেশের মধ্যেও প্রথম স্থান অর্জন করেন নাজমুস সাকিব। একই বছর ওমানের রাজধানী মাসকাটে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়ও প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি।
২০১৫ সালে আফ্রিকা মহাদেশের সুদানের রাজধানী খার্তুমে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় ৬৫ দেশের মধ্যেও সেরা হন তিনি। একই বছর কাতারে অনুষ্ঠিত ১৮ দেশের মধ্যে প্রথম হন নাজমুস সাকিব। ২০১৬ সালে মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক কেরাত প্রতিযোগিতায়ও প্রথম স্থান অর্জন করেন।
সাইফুর রহমান ত্বকী : ২০১৭ সালে কুয়েতের আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন সাইফুর রহমান ত্বকী। ২০১৮ বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। ২০১৯ সালে (২১ জুন) জর্দানে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন সাইফুর রহমান ত্বকী।
তরিকুল ইসলাম : ২০১৭ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ১০৩ দেশের প্রতিনিধির মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশন মাছরাঙা’র আয়োজন ‘আল কুরআনের আলো’ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। ২০১৫ সালে বাংলাভিশনের ‘পবিত্র কুরআনের আলো’ প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ স্থান অর্জন করেন। ২০১৭ সালে এনটিভিতে ‘পিএইচপি কুরআনের আলো’ প্রতিযোগিতায় পঞ্চম স্থান অর্জন করেন। ২০১৭ সালে হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের ‘জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায়ও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন তরিকুল ইসলাম।
আব্দুল্লাহ আল মামুন : ২০১৩ সালে সৌদি আরবে মালেক আব্দুল আজিজ আল-সৌদি আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় ৭৩ দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন আব্দুল্লাহ আল-মামুন। ২০১৬ সালে দুবাই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ৮৪ দেশের প্রতিযোগিদের মধ্যে হেফজ গ্রুপে ৪র্থ এবং হুসনে সাউত গ্রুপে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন।
২০১৭ সালে মিসরে অনুষ্ঠিত ২৪তম আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বের ৭০ দেশের প্রতিনিধিদের পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকারের অনন্য গৌরব অর্জন করেছেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সুপরিচিত মুখ আরো অনেক হাফেজে কুরআনকেই সালসাবিল বিশেষ সম্মাননা প্রদান করবেন। নিঃসন্দেহে সম্মাননা প্রদানের এ উদ্যোগটি বিশেষভাবে প্রশংসার দাবি রাখে।