৫ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ২২শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৫ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

বৈচিত্রের মাঝে তিনিই সেরা

  • আমিনুল ইসলাম কাসেমী

বৈচিত্রময় এই দেশ। নানান মত ও পথের মানুষ এখানে। একেকজন একেক ঘরানার। কেউ দেওবন্দী, কেউ বেরলভী, কেউ আলিয়া কেন্দ্রিক, কিন্তু এত্ত মত–পথের মধ্যেও  একজন মানুষ  ঠিকই দ্যুতি ছড়াচ্ছেন, যিনি দেওবন্দী চিন্তাধারার প্রাণপুরুষ, শত ঝড়-ঝঞ্ঝায় দেওবন্দীয়্যাত তথা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের চিন্তা–চেতনাকে আঁকড়ে ধরে আছেন। কোনো ইজম তাঁর পথ আটকাতে পারছেনা, বরং দিনে দিনে তিনি আরো আলোকিত হয়ে ওঠছেন। মানুষের হৃদয়মন্দিরে জায়গা করে নিচ্ছেন। শত বজ্রনিনাদে স্বমহিমায় এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

একসময় অনেকের চক্ষুশূল ছিল তাঁর অগ্রযাত্রা। তাঁর গতি স্লথ করে দেওয়ার বহু অপকৌশল করা হয়েছে। জামার আস্তিন ধরে টেনে নামানোর চেষ্টা করা হয়েছে হাজারো বার। আবার কখনো জেল-জুলুম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরেও তিনি আলোকিত। বৈচিত্রময় এদেশের বিচিত্র স্বভাবের মানুষগুলো আদাজল খেয়ে তাঁর বিরুদ্ধাচারণ করেছে, তবুও তিনি সত্যপথে রয়ে গেছেন মহামানবের ভূমিকায়।

একজন গ্র্যান্ড ইমাম। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ-ই মনে হয় প্রথম কোন দেওবন্দী আলেমের নামের শুরুতে শোভা পায়। আমার জানামতে এদেশের কোন আলেমকে এমন সন্মান–ইজ্জতে ভূষিত হতে দেখা যায়নি। যেমন, সৌদিআরব বা বড় বড় ইসলামী কান্ট্রিতে সেখানকার বড় আলেমকে এমন উপাধি দেওয়া হয়। যেমন, হজের খুতবা যিনি দেন তাঁকে সৌদি সরকার বিষেষ মর্যাদা প্রদান করে থাকে। তাঁকে সেদেশের আলেমদের সর্বোচ্চ সন্মানিত ব্যক্তি হিসাবে মূল্যায়ন করা হয়।

তেমনি এই বাংলাদেশে শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ সাহেবকে গ্র্যান্ড ইমাম হিসাবে সম্মান দেওয়া হয়েছে। যেটা এদেশের আলেমদের অন্যতম ব্যক্তি হিসাবে মূল্যায়ন করেছে দেশের কর্তৃপক্ষ, যেটা সত্যি গর্বের।

একসময় দেওবন্দী আলেমদের বাঁকা চোখে দেখত মানুষ। বিশেষ করে যত সরকার এদেশে ক্ষমতায় এসেছে, সকল সরকারই বিমাতাসুলভ আচরণ দেখিয়েছে। যারাই ক্ষমতার মসনদে বসত, তাদের গ্রাস করত কোন বেদআতী–বেরলভী বা মওদুদীধারার লোকজন। যারা নিজেদের মতাদর্শ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সরলপ্রাণ দেওবন্দী আলেমদের উপরে নানান খড়গ চাপাত। কখনো নাটক সাজিয়ে আলেমদের হেনেস্তা করার মত দুঃসাহস দেখিয়েছে। কখনো নানা ফাঁদে আটকিয়ে দেওবন্দী আলেমদের গতি রোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে।

তবে আমাদের গ্র্যান্ড ইমাম, তিনি তো শান্তির দূত। শান্তির বার্তা নিয়ে দেওবন্দী আলেমদের মুখপাত্রের ভূমিকায় কাজ করেছেন। মহান আল্লাহর অনুগ্রহে এমন মর্যাদার অধিকারী তিনি হয়েছেন। যেন মহাসমুদ্রতুল্য ব্যক্তিত্ব, যিনি ইনসাফ ও ন্যায়নীতির অবকাঠামো এঁকেছেন। মানুষকে শান্তির দিকে আহবান করেছেন। অনৈতিক এবং অসভ্যতার পথ আটকিয়ে শান্তিরস্রোতধারা বইয়ে দিয়েছেন তিনি।

একজন দেওবন্দী আলেমের এমন কর্মদক্ষতা কল্পনা করা যায় না। বিধর্মী দেশগুলোতে শান্তির বাণী পৌঁছে দিয়েছেন যিনি। দ্বীন ইসলামের অমীয়বাণী যাদের মুগ্ধ করেছে। ইসলাম যে শান্তি চায়, ইসলামের মধ্যেই রয়েছে শান্তি, সেটা তিনি বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অঙ্গন এবং দেশীয়  ভিন্ন চিন্তার মানুষকে দ্বীন ইসলামের দাওয়াত  যিনি কৌশলে পৌঁছান। কিছু মানুষের প্রতি কতিপয় আলেম বিরূপ ধারণা পোষণ করেন, দূর থেকে অনুমান করে তাদের ছিটকে ফেলে দেন৷, কখনো দ্বীন ইসলাম থেকেই খারেজ করে দেন, গোমরাহ বা নাস্তিক তকমা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেন, কেউ যাদের কাছে গিয়ে দ্বীনের বাণী পৌঁছান না, এরকম হাজারো সেলিব্রিটি বা খ্যাতিমান ব্যক্তি রয়েছেন যারা নিজ কর্মগুণে সেরা, এই বলয়ে আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ সাহেবই সুকৌশলে দাওয়াতী কাজ করে থাকেন। যিনি যে পর্যায়ের যাকে সেভাবে দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিতে সক্ষম হয়েছেন এবং তাঁর এই কৌশলগুলো আলোর মুখ দেখেছে। স্বপ্ন যেন বাস্তবায়ন হয়েছে। যেকারণে ঐ বলয়ের মানুষদের মুখে ইসলামের কথা শোনা যায়। তাদের মুখে এখন আলেমদের জয়গান। ওলামায়ে দেওবন্দের ঐতিহ্য অবদান অকপটে স্বীকার করে। কওমী মাদ্রাসার সাথে সকলের নাড়ির সম্পর্ক, কওমী মাদ্রাসার শিক্ষাই আমাদের গোড়ার শিক্ষা—এমন অভিব্যক্তি তারা এখন প্রকাশ করেন।

এজন্য বৈচিত্রের মাঝে তিনিই সেরা। যত মতবাদ বা চিন্তাধারা জাগ্রত হোকনা কেন, দেওবন্দী চিন্তাধারার কেতনধারী মহান ব্যক্তিত্ব আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বেমেছাল—অতুলনীয়।

আল্লাহ তায়ালা আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ সাহেবকে নেক হায়াত দান করুন। আমিন।

লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট

শেয়ার করুন


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ১৯৮৬ - ২০২৩ মাসিক পাথেয় (রেজিঃ ডি.এ. ৬৭৫) | patheo24.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com