পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ব্রেনের এনজিওগ্রামের সঙ্গে খুব কম মানুষই পরিচিত। ব্রেনের এনজিওগ্রামকে বলা হয় ‘ডিএসএ’ বা ‘ডিজিটাল সাবট্রাকশন এনজিওগ্রাম’।
ব্রেনের এনজিওগ্রাম কী
ব্রেনের রক্তনালির রোগ কিন্তু বৈচিত্র্যময়। কখনো রক্তনালি বন্ধ হয়, আবার কখনো ফেটেও যায়।
কখনো আবার রক্তনালি নিজেদের মধ্যে অস্বাভাবিক কানেকশন তৈরি করে। একেক রোগের চিকিৎসা একেক রকম। ব্রেনের রক্তনালি ব্লক হয়ে গেলে যে স্ট্রোক হয় সেটাকে বলে ‘ইস্কেমিক স্ট্রোক’। আবার ফেটে গেলে যে সমস্যা হয় সেটাকে বলে ‘হেমোরেজিক স্ট্রোক’।
দুটিই মারাত্মক।
কেন করা হয়
মস্তিষ্কের এনজিওগ্রাম করার উদ্দেশ্য দুটি—রোগ নির্ণয় আর মস্তিষ্কের রক্তনালির চিকিৎসা। মস্তিষ্কের রক্তনালিতে বেশ কিছু রোগ হয়; যেমন—স্ট্রোক মস্তিষ্কের রক্তনালির রোগ। রক্তনালি বন্ধ হয়ে গেলে দেখা দেয় ‘ইস্কেমিক স্ট্রোক’।
আমাদের ঘাড় থেকে চারটি রক্তনালি মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ করে। এদের কোনোটির গোড়ায় ব্লক হয়ে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। হার্টের রক্তনালির মতো স্ট্যান্ট, যেটাকে অনেকেই রিং বলে থাকেন, তা লাগানোর প্রয়োজন হতে পারে। রক্তনালির ব্লক ধরতে প্রয়োজন ডিএসএর।
মস্তিষ্কের রক্তনালিতে ফোসকার মতো ফুলে যেতে পারে, যেটাকে বলে ‘এনিউরিজম’।
এনিউরিজম ফেটে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এ ধরনের রক্তক্ষরণকে বলে ‘সাব এরাকনয়েড হেমোরেজ’। এ ক্ষেত্রে এনিউরিজম আছে কি না তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে প্রয়োজন হয় ‘ডিএসএ’।
রক্তনালি জটলা পাকিয়ে যেতে পারে। একে বলে ‘আর্টেরিও ভেনাস ফিস্টুলা’ বা ‘এভিএম’। জটলা পাকানো রক্তনালি ফেটে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এভিএম নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজন ডিএসএ পরীক্ষা।
মস্তিষ্কের মূল রক্তনালিগুলো শুকিয়ে যেতে পারে। মূল রক্তনালির কাজ করার জন্য নতুন নতুন ছোট ছোট চিকন রক্তনালি তৈরি হতে পারে। একে বলে ‘ময়াময়া’ রোগ। এটি নিশ্চিত হতে প্রয়োজন পড়ে ডিএসএর।
অনেকের আবার আঘাতের কারণে দুটি রক্তনালিতে অস্বাভাবিক কানেকশন বা সংযোগ হতে পারে। একে বলে ‘ক্যারোটিড ক্যাভারনাস ফিস্টুলা’ বা ‘সিসিএফ’। এটি নির্ণয় করতেও প্রয়োজন ডিএসএর।
কিভাবে করা হয়?
হার্টের এনজিওগ্রাম যেভাবে করা হয়, ব্রেনের এনজিওগ্রাম ঠিক একইভাবে করা হয়। তবে পদ্ধতিগতভাবে কিছু পার্থক্য আছে। ব্রেনের এনজিওগ্রাম করার জন্য প্রয়োজন পড়ে ক্যাথল্যাবের। এনজিওগ্রাম করার আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কোনো সমস্যা না থাকলে রোগীকে ক্যাথল্যাবে নিয়ে যাওয়া হয়। রোগীর কুচকিতে ক্যানুলার মতো সিথ পরিয়ে দেওয়া হয়। এটিই মূল অংশ। এই কাজে রোগী কিছুটা ব্যথা পেতে পারে। তবে তা হাতে ক্যানুলা পরানোর মতোই। এরপর নিউরোইন্টারভেনশনিস্ট অয়্যার-ক্যাথেটারের মাধ্যমে ব্রেনে ডাই দিয়ে ছবি তোলেন। খুব বেশি সময় লাগে না। মিনিট তিরিশেক সময় লাগে।