পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বেশ কয়েকদিন ধরে আত্মগোপনে থাকার পর ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ই-অরেঞ্জের অন্যতম ‘মালিক’ শেখ সোহেল রানাকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভারত-নেপাল সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে আটক করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রাহকরা যখন আন্দোলন শুরু করে, তখন তদন্তে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিভিন্ন পণ্যের অর্ডারের বিপরীতে গ্রাহকরা যে অর্থ জমা দিয়েছেন, সেই অর্থ রীতিমতো লোপাট করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির দুটি ব্যাংক হিসাব থেকে বিভিন্ন সময় তুলে নেওয়া হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সোহেল রানারও নাম রয়েছে, তিনি নিয়েছেন আড়াই কোটি টাকা।
তদন্তে যতবারই ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সোহেল রানার নাম উঠে এসেছে, ততবারই তিনি অস্বীকার করেছেন। এক পর্যায়ে পালিয়ে গেলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। তদন্তে বেরিয়ে আসে, সোহেল রানা পারিবারিকভাবেই এই ব্যবসা শুরু করেন, তবে নিজেকে কখনোই সামনে আনেননি। মূলত নিজের বোন আর ভগ্নিপতিই ব্যবসার দেখভাল করতেন।
ই-অরেঞ্জের দুটি ব্যাংক হিসাব খুঁজে পেয়েছে তদন্ত দল। একটি অ্যাকাউন্টে গত ২০ জুলাই পর্যন্ত জমা পড়েছে ৬২০ কোটি ৬৭ লাখ ২০ হাজার ৭২৯ টাকা। এই অর্থ থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে ৬২০ কোটি ৪৪ লাখ ৭১ হাজার ৯৯২ টাকা। অর্থাৎ, ওই অ্যাকাউন্টটাতে মাত্র সাড়ে ২২ লাখ টাকার মতো আছে। বাকি সব টাকা কোনো খাত না দেখিয়েই তুলে নেওয়া হয়েছে।
অন্য আরেকটি অ্যাকাউন্টে গত ৩০ জুন পর্যন্ত জমা পড়েছে ৩৯১ কোটি ৬৭ লাখ ৬১ হাজার ৮৭৯ টাকা। এই হিসাব থেকেও প্রায় পুরো অর্থ তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানে আছে ৮৯ লাখ ৬৫ হাজার ৬১৯ টাকা। অর্থাৎ, তুলে নেওয়া হয়েছে ৩৮৮ কোটি ৭৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৫৯ টাকা।
এসব আত্মসাতের বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আসার পর মামলার প্রেক্ষিতে ই-অরেঞ্জের দুই মালিক সোনিয়া মেহজাবিন এবং তার স্বামী মাসুকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন। এই দুজন হলেন সোহেল রানার বোন ও ভগ্নিপতি। নথিপত্রে কোথায়ও সোহেল রানাকে ই-অরেঞ্জের পরিচালক আবার কোথাও প্রধান পৃষ্ঠপোষক লেখা হয়েছে।