পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে ভারতে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। তীব্র শীত উপেক্ষা করে নয়াদিল্লির রাস্তায় জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। সিএএ বাতিলে প্রস্তাব পাস হয়েছে কেরালার বিধানসভায়। এক্ষেত্রে রাজ্যকে অকার্যকর করতে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইনে করার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিকে, বিক্ষোভ দমনে মোদি সরকার কোটি কোটি টাকা ঢালছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে তাপমাত্রায় কনকনে ঠাণ্ডায় খোলা আকাশের নীচে ২০ দিনের ছোট্ট শিশুকে নিয়ে বিক্ষোভে নেমেছেন এই মা। সন্তান বড় হলে যেনো বলতে পারেন অন্যায়ের প্রতিবাদ করে চেষ্টা করেছিলেন সংবিধান বাঁচাতে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) নয়াদিল্লির শাহীনবাগের রাস্তায় এভাবেই জড়ো হোন তারা। দিল্লির জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের সহিংসতার পর থেকেই নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় মুসলিম নারীরা। পরে তাদের সঙ্গে হিন্দু সহ অন্য ধর্মের উদারবাদী মানুষরাও যোগ দিতে থাকেন। আর তাদের এ আন্দোলনের মাধ্যমেই বরণ করে নেন নতুন বছরকে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, এই ঠাণ্ডা আমাদের জন্য কিছু নয়, কারণ সরকার যা করতে যাচ্ছে তা হলে আমাদের সবার ভবিষ্যৎ নষ্ট হবে, ঘরে বসে থাকলে চলবে না।
১৭ দিন ধরে এখানে আন্দোলন করছি, এত ঠাণ্ডায় ঘরে থাকাই যেখানে কষ্টকর সেখানে ছোট বাচ্চা নিয়ে এখানে সবাই এমনি এমনি বসে নেই। আমাদের দাবি সিএএ বাতিল করতে হবে, সরকার আমাদের সঙ্গে যেনো এমন অন্যায় না করে এটাই আমাদের চাওয়া। তবে এসব বিক্ষোভের তোয়াক্কা না করে বিজেপি নেতারা বলছেন, যারা এই আইনের বিরোধিতা করছে তারা দেশের শত্রু।
বিজেপি নেতারা বলছেন, এরা দেশদ্রোহী, এদের ভারতে থাকার কোন অধিকার নেই। জ্বালাও পোড়াও যারা করছে তাদের পাকিস্তান ভালো লাগলে পাকিস্তানে চলে যাক, বাংলাদেশ পছন্দ হলে বাংলাদেশে চলে যাক।
ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ বিজেপি শাসিত নয় এমন সব রাজ্যেরে মুখ্যমন্ত্রীরা জানিয়ে দিয়েছেন তারা সিএএ বাস্তবায়ন করবেন না। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিলে প্রস্তাব পাস হয়েছে কেরালার বিধানসভায়। রাজ্যর মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, সংবিধানের আদর্শের সঙ্গে এ আইন সাংঘর্ষিক, ধর্মনিরপেক্ষতার স্বার্থে এ আইন প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
তবে কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে রাজ্য কোন কিছু করতে পারবে না। আর সেজন্যই নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইনে করার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার।