পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: আজ ৩ অক্টোবর। ১৫০২ সালে আজকের এই দিনে মুসলিম হাজ্বীদের জাহাজ পুড়িয়ে তাদেরকে পানিতে ডুবিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করেছিলেন পর্তুগিজ নাবিক ইতিহাসের বর্বর বণিক ভাস্কো দা গামা।
ভারতের কালিকটের রাজার উপর খুবই ক্ষুব্ধ ছিলেন ভাস্কো। কারণ রাজা তার দেশে ব্যাবসা করতে হলে ভাস্কোর কাছে খাজনা হিসেবে দাবি করেছিলেন কাচা সোনা। কালিকটের রাজার উপর প্রতিশোধ নিতে ১৫০২ সালে পর্তুগাল থেকে ৪র্থ বহর ১৫টা জাহাজ আর ৮০০ লোক অস্ত্র নিয়ে রওনা দেন ভাস্কো।
১৫০২ সালের অক্টোবরে বিশাল নৌবহর এই ভারতে পৌঁছল। সেখানে “মিরি” নামে এক জাহাজ আসছিল মক্কা থেকে, হজ্জযাত্রীতে পরিপূর্ণ। সেই জাহাজে আক্রমণ চালিয়ে দা গামা সকল যাত্রীকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেন, তার আগে তাদের জ্বালিয়ে দেন। জাহাজে ছিল চারশ যাত্রী, যেখানে ৫০ জনই মহিলা, ছিলেন মিসরের রাষ্ট্রদূত। মহিলাগুলো তাদের বাচ্চাদের ধরে প্রাণভিক্ষা চাইছিল, কিন্তু দা গামা দেখেন তাদের গায়ে সোনার অলংকার। সবাই নিজেদের মুক্তিপণ দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু দা গামা সেটা না শুনে তাদের মেরে ফেলেন।
পর্তুগিজদের একদল বণিক মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদেরকে মুক্ত করে দেয়ার পরামর্শও দেয়। কিন্তু গামা তার লোকদের বুঝিয়েছিলেন যে, মুক্তিপণ আদায়ের পরিবর্তে শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদণ্ড দিলে মুসলমানরা বিশ্বাস করবে যে পর্তুগিজ নাবিক যা ইচ্ছা তাই করতে পারে।
এই ভয়ানক সমুদ্র হত্যাযজ্ঞ কয়েকদিন যাবত চলেছিলো।
পর্তুগালের ভাস্কো দা গামাকে ইতিহাস মনে রাখে ইউরোপীয়দের ভারতে আসার পথ সুগম করার পথপ্রদর্শক হিসেবে। কিন্তু তার আগমন ভারতবর্ষের জন্য আদৌ সুখকর ছিল না। তবে ইতিহাস বইগুলো তার ভারত ‘আবিষ্কার’-কেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখে, যে কারণে ভারতবর্ষে তার করে যাওয়া বর্বরতা খুব কম মানুষই জানে, যদি ইতিহাসপ্রিয় না হয়ে থাকে।
সূত্র- আল জাজিরা ও রোর বাংলা