ভোলায় আরও একটি কূপে গ্যাসের সন্ধান

ভোলায় আরও একটি কূপে গ্যাসের সন্ধান

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : দ্বীপজেলা ভোলায় একের পর এক জ্বালানি গ্যাস কূপের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। ভোলার ইলিশা-১ নামে নতুন আরও একটি কূপ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু করেছে বাপেক্স। এ নিয়ে জেলার মোট নয়টি কূপে গ্যাসের সন্ধান পেল বাপেক্স।

শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৭টা থেকে অগ্নি প্রজ্বলনের মাধ্যমে এ গ্যাস উত্তোলন শুরু করে বাপেক্স। প্রতিদিন এই গ্যাস কূপ থেকে ২০ থেকে ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে আশা করা করছে সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি গ্যাসের চড়া দাম ও সংকটের মধ্যে একের পর এক গ্যাস কূপ পাওয়ায় এখন আশার আলো দ্বীপজেলা ভোলা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশে জ্বালানি সংকট দূর করার লক্ষে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। ৮ মার্চ ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে মালেরহাট সংলগ্ন এলাকায় ইলিশা-১ কুপ এ বাপেক্স খনন শুরু করে।

বাপেক্সের নকশা ও লোকেশন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার গ্যাসপ্রম কূপ খনন কাজ পরিচালনা করছে। ৩ হাজার ৪৩৬ মিটার গভীরতায় তিনটি স্তরে ডিএসটি (ড্রিল স্টেম স্টেট) এর মাধ্যমে সফলভাবে কূপ খনন শেষ হয় ২৪ এপ্রিল। এরপর শুক্রবার সকাল ৭ টা থেকে আগুন জ্বালিয়ে গ্যাসের উপস্থিতি তারা নিশ্চিত করা হয়। গ্যাসের প্রবাহ ও প্রেশার পজিটিভ।

বাপেক্সের ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দৈনিক এই কূপে ২০ থেক ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। এটা একটা স্তরে। আরও দুটি স্তরে পরীক্ষা করা হবে। সবগুলো স্তরের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই বলা যাবে প্রতিদিন কত মিলিয়ন প্রডাকশন করা যাবে।”

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ বিসিএফ ঘনফুট গ্যাসের মজুদ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে সময় লাগবে আরও বেশ কিছুদিন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১৫ মে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্যাস উত্তোলন করবেন বলে জানিয়েছেন বাপেক্স।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, ভোলায় ইলিশা-১ গ্যাসক্ষেত্রে এর আগে ১৯৯৩-৯৪ সালে ভোলার বোরহানউদ্দিনে শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রে আবিষ্কারের পর একে একে সদর ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় শাহবাজপুর ও ভোলা নর্থ নামের আলাদা দুটি গ্যাসক্ষেত্রে আটটি কূপ খনন করা হয়। এসব কূপে মোট গ্যাস মজুদের পরিমাণ ১.৭ টিসিএফ ঘনফুট বলে জানা গেছে।

গ্যাসের সম্ভাবনা যাচাই করতে আগামী অক্টোবর থেকে নতুন করে তেল গ্যাস অনুসন্ধান করবে বাপেক্সের ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগ।

জানা যায়, বর্তমানে কেবল চারটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। প্রতিদিন ১৪০ এমএমসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা গেলেও এর সম্পূর্ণ ব্যবহার হচ্ছে না। বর্তমানে চারটি বিদ্যুৎ প্লান্টসহ ক্ষুদ্র কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে। এতে মাত্র ৮০ এমএমসিএফ গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে। গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্লান্ট থেকে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে দৈনিক ৪৮৫ মেগাওয়াট।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *