পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : গাজা শহরের ফিলিস্তিনি বাসিন্দা হুসেইন। তিনি যখন ইসরায়েলে কাজ করার অনুমতি পেয়েছিলেন, তখন আকর্ষণীয় বেতনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দিতে প্রস্তুত ছিলেন। তিনি বলেন, কাজ পাওয়ার পর আমি অনুভব করলাম, আমার জন্য যেন স্বর্গের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। কারণ মজুরিটা ভালোই। ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর।
খবরে বলা হচ্ছে, গাজাবাসী যুবকদের অনেকেই ইসরায়েলের অভ্যন্তরে কাজ করার জন্য তাদের পড়াশুনা ছেড়ে দিয়েছে। তবে কাজ পেতে হুসেইনকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছিল। কারণ তারা পুরো নাম গোপন রাখতে বলা হয়েছিল।
২০০৭ সাল থেকে ইসরায়েলি-অবরোধের অধীনে চলে যায় গাজা অঞ্চলের প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি। তাদের ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ বেকারত্বে ভুগছে। এমনকি স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরাও কাজ পেতে লড়াই করছে। গত এক দশকে ইসরায়েলি ওয়ার্ক পারমিট ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি বিরল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা কাজের অফার পাচ্ছে তারা যেন সোনার হারিণ হাতের মুঠোয় তুলে নিচ্ছে।
হুসেইন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং তার উপার্জনের সম্ভাবনা বাড়ানোর আশা করছিলেন। কিন্তু তিন সন্তানের খাওয়ানোর জন্য এবং ৩ হাজার ৫০০ ডলারের ছাত্রঋণের কিস্তি মেটানোর জন্য পড়াশোনা আর চালাতে সক্ষম হচ্ছিলেন না তিনি।
হুসেইন জানাচ্ছেন, আমি কয়েক বছর ধরে বেকার ছিলাম। কাজ পেতে গাজা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই। তিনি তেল আবিবের দক্ষিণে জাফাতে একজন ডেলিভারি পার্সন হিসেবে চাকরি পান। ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি জায়গায় প্রতিদিনের মজুরি ২৫০ থেকে ৭০০ শেকেল পাওয়া যায়। এই অংকটা ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের কাছে অনেকে বেশি।
হামাস ২০০৭ সালে গাজায় ক্ষমতা গ্রহণ করে। ইসলামপন্থী গোষ্ঠীটির ক্ষমতা দখলের আগে গাজার প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের অভ্যন্তরে কাজ করার অনুমতি পেতেন। কিন্তু হামাস এবং ইসরায়েল গত ১৫ বছর ধরে বারবার লড়াই করেছে। এ কারণে ল্যান্ড ক্রসিংগুলো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল।
কয়েক মাস আগে সীমান্ত পুনরায় খুলে দিয়েছে ইসরায়েল। গাজার ১২ হাজার ফিলিস্তিনিদের জান্য ওয়ার্ক পারমিট জারি করেছে। বেশিরভাগই নবায়ন করার বিকল্পসহ ছয় মাসের ভিসা দেওয়া হচ্ছে। ইরেজ ক্রসিংয়ের পার্কিং লট দিয়ে গাজাবাসী ইসরায়েলে প্রবেশ করে।
এখানে ট্যাক্সি এবং মিনিবাসের ভিড় লেগেই থাকে। কারণ গাড়িগুলো ফিলিস্তিনিদের কাজে নিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে। তাদের মধ্যে একজন মাহমুদ। তিনি তেল আবিবের উত্তরে একটি সমৃদ্ধ শহর হার্জলিয়ার একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করছেন।