মাঈন উদ্দিন আহমেদের কয়েকটি কবিতা

মাঈন উদ্দিন আহমেদের কয়েকটি কবিতা

  • মাঈন উদ্দিন আহমেদ

যেখানে আছি আমি

এই তো আমার গ্রাম আমি এই গ্রামের ছেলে,
দুপুরবেলা ঘুমিয়ে পড়ি মায়ের আঁচল পেলে।

এই তো আমার বাড়ি ভাঙা টিনের ঘর,
এইখানেতে সুখে-দুঃখে থাকছি পরস্পর।
এই তো আমার মা মায়ের পাশেই বাবা,
যাদের মুখের মাঝে ভাসে পশ্চিমে কাবা।

এই তো আমার ভাই ভাই পাগলা বোন,
জনম জনম যারা আমার সবচেয়ে আপন।
এই তো আমার দোস্ত ডাকছে ব্যাকুল স্বরে,
ওদের সঙ্গে শত স্মৃতি বুকে খেলা করে।

এই তো আমার জমি কৃষক ঝরায় ঘাম,
খেয়ে বেঁচে শুকুর করি খোদাকে সালাম।
এই তো আমার নদী আড়িয়াল খাঁ নাম,
যার জলেতে ওজু করে খোদাকে সালাম।

এই তো আমার মাটি ভীষণ শীতল ভাই,
মরার পরে এই মাটিতে জায়গাটুকু চাই।

সুদিন আসতেই হবে

তোমায় ঘিরে দ্বিধার ছায়া ওড়ে,
চোখের মাঝে তিন শতকের মোহ।
ধরতে গেলেই কর্পূর দেয় হানা,
বুকে জমে লাল-নীল বিদ্রোহ।

তোমায় নিয়ে উন্মাদনা যখন,
রঙিন নেশায় রইলে উদাসীন।
দিন-রাতের উপরিপাতন করে,
তোমায় ভাবলে ক্ষরণ ডোপামিন।

তাই সবটা ভুলে আমি তোমার জন্য হাঁটি,
সুদিন আসতেই হবে আমার চাওয়া খাঁটি।

এক ইনকিলাবে উড়িয়ে দেব সব,
তোমার মুখের হাসি অটুট রেখে।
প্রজাপতি ঘুমিয়ে যাবে তখন,
এই দশকের অবহেলা গায় মেখে।

তোমার তীরে ভাবনা নোঙর করে,
আশ্রয় খোঁজে ঝড়ে ভাঙা মাস্তুল।
নাকাল নাবিক তোমার চোখের মোহে,
তখনো কেমন হয়ে আছে মশগুল।

তোমার আশায় এখন দেখো মরণ নয়ন তারায়,
কেউ কি জানে নক্ষত্র খসে কোথায় গিয়ে হারায়!

তোমার স্বাধীন শহরে দেব হানা,
প্রেমের তোরণ খুলে নেব একদিন।
তিনটে কদম তোমার হাতে দিয়ে,
বলব তুমি আমার বাঁচার হেপারিন।

বিশ্বযুদ্ধ বাঁধিয়ে দেব যদি,
তখনো তুমি থাকো উদাসীন।
দিন-রাতের উপরিপাতন করে,
তোমায় ভাবলে ক্ষরণ ডোপামিন।

তাই সবটা ভুলে আমি তোমার জন্য হাঁটি,
সুদিন আসতেই হবে আমার চাওয়া খাঁটি।

নিরর্থক

আঁধার বন মুখর হুতুমের সভায়,
ব্যাঙের বিদ্রোহ চলে অদূর ডোবায়।
সেনাপতি বাজ কুড়াল ছাড়ে হুংকারও,
বসন্তের কোকিল ভয়ে হয় জড়সড়।
আনাড়ি আঁধারে লাগে বর্ণিল আভা,
কপালে কালো টিপে ছাতিমের শোভা।
সেই শোভা চুকে যায় আলোর মিছিলে,
খুশি মনে নিয়ে যায় বোকা গাংচিলে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *