মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশকে ১১০ দেশের সুপারিশ

মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশকে ১১০ দেশের সুপারিশ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার পর্যালোচনায় বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য ১১০টি দেশের তুলে ধরা সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩০১টি সুপারিশ প্রতিবেদন আকারে ইউপিআর সভায় উপস্থাপন করা হয়। পর্যালোচনা সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিলেও সুপারিশ অনুমোদনের সভায় তিনি ছিলেন না। তার পরিবর্তে সভায় বক্তব্য দেন জেনেভায় জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমান।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাতে জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ‘ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর)’ বা সর্বজনীন পুনর্বীক্ষণ পদ্ধতির ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বাংলাদেশের ইউপিআর প্রতিবেদনের খসড়া গৃহীত হয়েছে।

সোমবার বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর পর্যালোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে তৃতীয় ইউপিআরে উঠে আসা ১৭৬টি সুপারিশ বাস্তবায়নে অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী। এরপর জাতিসংঘের সদস্য ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১১০টি দেশ তাদের মূল্যায়ন ও সুপারিশ তুলে ধরে। ওই সুপারিশগুলোর সংকলন প্রতিবেদন তৈরি করার দায়িত্ব পড়ে পাকিস্তান, কিউবা ও রোমানিয়ার ওপর। গতকাল বুধবার জেনেভায় জাতিসংঘ দপ্তরে রোমানিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি রাজভান রুসু প্রতিবেদনটি অধিবেশনে পেশ করেন। খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে কোনো রাষ্ট্র আপত্তি না করায় তা গৃহীত হয়।

এরপর জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি এম সুফিউর রহমান ইউপিআর ওয়ার্কিং গ্রুপের অধিবেশনে বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইউপিআরে ১১০টি দেশ আলোচনায় অংশ নিয়ে মতামত দিয়েছে। এছাড়া ১২টি দেশ আগ্রিম প্রশ্ন পাঠিয়ে পর্যালোচনায় সহযোগিতা করেছে। তিনি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিবেদনে মানবাধিকারকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি ও বিধিবিষয়ক অগ্রগতিগুলো তুলে ধরেছে।

ইউপিআরের প্রতি বাংলাদেশের জোরালো অঙ্গীকার আছে। সব সুপারিশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাংলাদেশ এ বিষয়ে ইউপিআরকে জানাবে।

গুম থেকে রক্ষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ এবং নিষ্ঠুর শাস্তির বিরুদ্ধে সনদবিষয়ক ঐচ্ছিক প্রটোকল স্বাক্ষর করতে বাংলাদেশকে সুপারিশ করেছে স্পেন।

স্লোভাকিয়া বাংলাদেশকে আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার সুপারিশ দিয়েছে।

বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশিদের ভোট ও সরকার নির্বাচনের সামর্থ্যকে সুরক্ষা দেওয়ার সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত, জবাবদিহি ও বিচার নিশ্চিত করারও সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিলসহ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা বিলোপ করার সুপারিশ করেছে। নেদারল্যান্ডস ‘লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্রান্সজেন্ডার, কুইর, ইন্টারসেক্স ও অন্যদের (এলজিবিটিকিউআই প্লাস)’ জন্য দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারাসহ এ সম্পর্কিত অন্যান্য আইন বিলোপ করার সুপারিশ করেছে। দেশটি সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতেও সুপারিশ করেছে।

সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশকে আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে না দেওয়ার নীতি অনুসরণ করার সুপারিশ করেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *