মানব পাচারকারীদের ঠেকান

মানব পাচারকারীদের ঠেকান

লিবিয়ায় বাংলাদেশি হত্যা

মানব পাচারকারীদের ঠেকান

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : মানবপাচারকারীরা এখনো সরব দেশে বিদেশে। আমাদের চারপাশেই তাদের বসবাস। এদের চিহ্নিত করার দাবি উঠেছে আবারও। যখনই বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তখনই আলোচনায় আসে এ ইস্যুটি। কিন্তু এই পাচারকারীদের রুখবে কে? অত্যন্ত লজ্জার ও বিস্ময়ের হলো, লিবিয়ায় বিদ্রোহী মিলিশিয়া বাহিনীর গণহত্যায় নির্দয় গুলিবর্ষণে নিহত হয়েছে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জন অভিবাসী। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ১১ জন বাংলাদেশি। হতভাগ্য বাংলাদেশিরা মানব পাচারকারী দলের মাধ্যমে গৃহযুদ্ধ কবলিত লিবিয়ায় গিয়েছিল। সে দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিজদাহ থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরবর্তী রাজধানী ত্রিপোলিতে যাওয়ার পথে হতভাগ্য অভিবাসীদের আটক করে লিবিয়ান মিলিশিয়া বাহিনীর সদস্যরা। তারা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য জিম্মদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়।

মিলিশিয়া বাহিনীর নির্যাতক এক সদস্যকে জিম্মিরা হত্যা করলে তার বদলা নিতে তারা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে জিম্মিদের হতাহত করে। স্মর্তব্য, ইউরোপে মানব পাচারের সবচেয়ে বড় রুট এখন ভূমধ্যসাগর তীরের দেশ লিবিয়া। পাচারকারী চক্র বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে যুবকদের লিবিয়ায় নিয়ে যায়। কখনো কখনো তাদের পণবন্দী করে পরিবারের কাছ থেকে সাত-আট লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। ভাগ্য ভালো হলে অভিবাসী প্রত্যাশীদের ইতালি বা ইউরোপের কোনো দেশে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে নৌকা বা ট্রলারে তুলে দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রেই এসব অভিবাসীর সলিল সমাধি হয় সাগরে। আবার অনেকের জীবন যায় মানব পাচারকারীদের নির্যাতন-নির্মমতায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রের তথ্যানুযায়ী, দেশজুড়ে থাকা পাচারকারী চক্রের সদস্যরা ইউরোপে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে লোক সংগ্রহ করে। তারপর সেসব লোককে সড়ক-বিমানপথ মিলিয়ে তিনটি রুটে লিবিয়ায় পাঠায়। সর্বশেষ লিবিয়া থেকে নৌপথে তিউনিশিয়ার উপকূল হয়ে ইউরোপে পাঠায়। সাত থেকে আট লাখ টাকার বিনিময়ে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগে দুই মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত।

পত্রিকার পাতা উল্টালেই আমরা দেখতে পাই, সাগর পথে ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার সময় ট্রলারডুবিতে মৃত্যুর ঘটনা প্রায় নিয়মিত ঘটে চলেছে। তারপরও বন্ধ হচ্ছে না মানব পাচার। মানব পাচার বন্ধে দেশজুড়ে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো দরকার। আমরা মনে করি, এখনই উদ্যোগী হতে হবে পাচারকারী দলের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার বিষয়ে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *