মির্জা গালিব

মির্জা গালিব

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : উপমহাদেশের অন্যতম উর্দু কবি মির্জা গালিবের পুরো নাম মির্জা আব্দুল্লাহ বেগ খান গালিব। তাঁকে উর্দু সাহিত্যের সম্রাটও বলা হয়। তিনি কখনো জীবিকার জন্য কাজ করেননি। তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ছিল শরাব বা মদ। খেলতেন জুয়াও। তিনি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়, ধারকর্জ করে অথবা কোনো বন্ধুর আর্থিক সহযোগিতায় জীবন যাপন করেছেন। তাঁর খ্যাতি আসে মৃত্যুর পর।

কবি বিয়ে করেন মাত্র ১৩ বছর বয়সে। সেই বিয়ে সুখের হয়নি। এরপর তিনি প্রেমে পড়েন অন্য এক নারীর। সেই প্রেম পরিণতি পায়নি। প্রেম, জীবন, পৃথিবী, ব্যক্তিজীবনের নানা বিষয়কে কবিতায় মেলে ধরেছেন মির্জা গালিব। তাঁর কাব্যে উঠে এসেছে মোগল সাম্রাজ্যের পতনের কথাও।

আজীবন অর্থকষ্টে ভোগা, ঋণগ্রস্ত কবির ব্যক্তিজীবনে সাত সন্তানের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু কোনো কিছুই তাঁর কাব্যস্রোতকে থামাতে পারেনি। ছিলেন সমসাময়িক অন্য কবিদের থেকে অনেকটাই আলাদা। ধর্মের প্রতি ছিলেন নিস্পৃহ। সেই সময়ের অধিকাংশ কবি জীবন ও বাস্তবতার বাইরে কাব্য রচনা করতে পারতেন না। গালিবের কবিতায়ই প্রথম ফুটে ওঠে জীবনের সুর, বাস্তবতার আঘাত, নিয়তি এবং চাওয়া-পাওয়ার সমীকরণ।

জীবনের অন্তিম পর্যায়ে সিপাহি বিদ্রোহের পর গালিবের আশ্রয়স্থল হয় রামপুরের নবাব ইউসুফ আলি খানের কাছে। বরাদ্দ হয় মাসিক বৃত্তি। কিন্তু সিপাহি বিদ্রোহের আগুনে দিল্লির স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য, সওদাগরি, বেচাকেনা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, তা কেউ জানত না। জোড়াতালি দিয়ে ডাল-রুটির ব্যবস্থা করতেই প্রাণ ওষ্ঠাগত। কিন্তু মদ ছাড়া কেমন করে জীবন কাটাবেন গালিব! আর এই মদের কারণেই মহাজনেরা তাঁর বিরুদ্ধে নালিশ পর্যন্ত করেছেন।

সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য তাঁকে ‘দাবির-উল-মালিক’ ও ‘নাজিম-উদ-দৌলা’ উপাধি দেওয়া হয়। ১৭৯৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর তিনি আগ্রা শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *